জন্মের কারণ; শ্লোক - ৪৫০

মানুষের জন্ম সূচনায়
নর নারীর যৌথ কারণ।
নর করে শুক্রাণু দান
নারী করে গর্ভে ধারণ। 

পাদটীকা: পৌরাণিক গল্প কাহিনী ব্যতিত, বাস্তবে নারী কখনোই পুরুষের শুক্রাণু ব্যাতিত গর্ভধারণ করতে পারে না। পুরুষের শুক্রাণু সহিত নারীর ডিম্বাণুর মিলন তথা নারীর অবদান ব্যতিত তা মানব শিশু রূপে ভূমিষ্ট হতে পারে না। মানব শিশুর জন্মে নর ও নারী উভয় পক্ষের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

জন্মের কারণ; শ্লোক - ৪৫০


বিচ্ছেদ; শ্লোক - ৬৭

বিচ্ছেদে প্রারম্ভ মানব জন্ম;
প্রথমত ছেদ নাড়ীর, মা ও শিশুর।
বিচ্ছেদে অন্ত মানব জীবন;
শেষ ছেদ মায়ায়, জন ও স্বজনের।

পাদটীকা: ভূমিষ্ট হওয়ার পর মায়ের সঙ্গে আমাদের নাড়ীর সংযোগ কর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জীবন যাত্রা। স্বতন্ত্র চলতে চলতে আমরা মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হই, গড়ে ওঠে পরষ্পরের মাঝে অদৃশ্য নাড়ীর টান। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে, শেষ বারের মত বিচ্ছেদ হয় আত্মীয়তার সম্পর্কে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে। 

বিচ্ছেদ; শ্লোক - ৬৭

স্রষ্টা চরিত্র; শ্লোক - ১২

মানব আপন স্বার্থেই গড়েছে
ঈশ্বর, খোদা, ভগবান; 
আপন হাতেই লিখেছে কিতাব
তাঁহার নামে জয়গান।

পাদটীকা: ঈশ্বর কখনো মানুষের সামনে এসে তার অস্তিত্ব, মহানুভবতা বা ক্ষমতার কথা জানান দেননি। এবং ঈশ্বরের সকল জয়গান মানুষের তৈরী বর্ণমালা দিয়ে মানুষের হাতেই লেখা। মানুষ প্রাকৃতিকভাবে আশাবাদী প্রাণী, ভরসা করতে ভালোবাসে, তাই সে, স্বীয় জ্ঞানের মাপকাঠি দিয়ে এই কাল্পনিক সত্তাকে সাজায়, এবং ভরসা করে অপ্রাপ্তিগুলো ভুলে থাকে। আবার এই অজ্ঞাত শক্তির ভয় দেখিয়ে অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করে। মোটকথা, ঈশ্বরের ধারণার স্রষ্টা মানুষ স্বয়ং।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

স্রষ্টা চরিত্র; শ্লোক - ১২


সাম্যের কথা; শ্লোক - ৪৭১

নির্বোধ ধর্মান্ধ না রই, 
চলো সবে সু মানুষ হই। 
জাত পাত ভেদ ভুলে, 
মানব সাম্যের কথা কই। 

পাদটীকা: নির্বোধেরাই কেবল জাত পাতের ভেদাভেদ করে, বিশ্বাসের ভিত্তিতে হানাহানি করে। মানুষ হিসেবে আমরা সকলই সমান, তাই আমাদের মানবিক হওয়া উচিত। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।



শেষ পরিচয়; শ্লোক - ৫০১

জাতপাত ও ধর্মে 
হানাহানি, বিজয়ী কেহ। 
হৃৎপিন্ড থামিলে 
পরিচয় লাশ, মৃতদেহ। 

পাদটীকা: কোন কোন মানব গোত্র যতক্ষণ জীবিত ততক্ষণ ব্যস্ত পারস্পরিক হানাহানিতে এবং বিচ্ছিন্ন বৈষম্য ভেদ বিভেদে। হৃতপিন্ড যখন থেমে যায়, ফুসফুস নিশ্বাস গ্রহণের ক্ষমতা হারায়, তখন সকলেই সমান, একই পরিচয়; লাশ, মৃতদেহ। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

অচ্ছুত নারী; শ্লোক - ৪৭৯

সব পুরুষের জন্ম হয়
মাতা নারীর গর্ভে।
অচ্ছুত নারী দূরে থাক
মহা পুরুষ সদর্পে।

পাদটীকা: কোন কোন সমাজে নারীর উন্নয়ণের পথে বাঁধা নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া স্বয়ং পুরুষ সন্তানেরা। এই পুরুষেরা, নিজেকে সুপুরুষ, মহাপুরুষ, পবিত্র পুরুষ দাবি করে। অন্য দিকে ৠতুকালীন সময়ের কারণে নারীকে অপবিত্র, অচ্ছুত ঘোষণা করে, অধিকার বঞ্চিত করে। যে নারীত্বের কারণে মানব জন্ম, সেই নারীত্বকে তাচ্ছিল্য বা অপমান করা মোটেও সুপুরুষ, মহাপুরুষ, বা পবিত্র পুরুষের পরিচয় নয়।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

অচ্ছুত নারী; শ্লোক - ৪৭৯

মিনি কাব্য - ৬৬

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
ধর্মের সাপ বড় বিষাক্ত
দংশন করে সব
মানব জাতি বড় অসহায়
নিরব স্বয়ং রব।


লড়াই; শ্লোক - ৩৩১

প্রতিটি প্রাণী আপন জীবনে
আপন লড়াই লড়ে।
সে প্রাণী বাস করুক জঙ্গলে
অথবা মানব ঘরে।

পাদটীকা: পৃথিবীটা এক যুদ্ধ ক্ষেত্র। এখানে বিজয়ীরাই টিকে থাকে দুর্বলেরা হারিয়ে যায় কালের স্রোতে। মানুষ সহ প্রতিটি প্রাণী নিজ নিজ ক্ষেত্রে লড়ে যাচ্ছে আপন অস্তিস্ত রক্ষায়। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

লড়াই; শ্লোক - ৩৩১


মিনি কাব্য - ২৩৩

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
জন্মসূত্রে প্রতিটি মানুষ
অদ্বিতীয় এবং স্বাধীন।
মানব সৃষ্ট সংস্কার
করে তাকে পরাধীন।

মিনি কাব্য - ২৪৫

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
এক শাস্ত্রে দেবতা বলে সমতল,
ধরণীকে কেন্দ্র করে সূর্য্য মামা ঘোরে।
অন্য শাস্ত্রে মানব বলে অসত্য,
সূর্য্যকে কেন্দ্র করে গ্রহেরা ছুটে চলে।

মিনি কাব্য - ৩০০

মিনি কাব্য - ৩০০
আরিফুর রহমান
-----------------
বড় কথায় বড় নয়
বড় হয় কর্মে।
বড় বৃক্ষে ভক্তি নয়
ভক্তি মানব ধর্মে।

পণ; শ্লোক - ৪৯৫

একলা জগতে আসা;
একলা লড়তে হয়, চলতে হয় পথ।
একলা এগিয়ে যাবো,
লক্ষ্যে পৌছে যাবো, এটাই শপথ।

পাদটীকা: মানব শিশু হিসেবে আমরা ভূমিষ্ট হই একা, এবং মৃত্যু বরণ করি একা। জন্ম এবং মৃত্যুর মাঝখানের সময়টাতে কেউ এসে পাশে দাঁড়াবে, এবং সহযোগিতা করবে এই ভাবনায় বসে না থেকে একলা পথ চলতে শেখা উচিত এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত জেনেও আপন লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া উচিত।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

পণ; শ্লোক - ৪৯৪

বিশ্বাসের বিষ; শ্লোক - ৪৩৯

দুনিয়ায় আছে যত বন্যপ্রানী 
করে না কেউ হানাহানি ধর্মের বিষে! 
মানব উন্নত সভ্যতা শিক্ষায়; 
নরকের কীট ঘাতক বিশ্বাসের বিষে। 

পাদটীকা: বন্যপ্রাণীকূল বা আমাদের চোখে অসভ্য প্রাণীকূল কখনোই ধর্মের কারণে কাউকে হত্যা করে না। বরঞ্চ সভ্য এবং সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে দাবী করা মানুষেরা করে থাকে। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিশ্বাসের বিষ


সমতা; শ্লোক - ৪০০

যত আছে নারী পুরুষ কিন্নর কিন্নরী,
মানবিক মাপে সকলেই সমান।
একই পথে ভূমিষ্ট সব মানব সন্তান,
সকলের তরে সমান সম্মান।

পাদটীকা: মানবিক মূল্যবোধের পরিমাপে, মানুষ হিসেবে প্রতিটি মানুষই সমান।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

যাত্রা; শ্লোক - ৩৯১

মানুষ জন্মে, শিক্ষিত হয়ে
দক্ষ হয়ে মরার জন্যে;
জীবন ভর ছুঁটে চলে, যেন
রকেট চলে মহাশূন্যে।

পাদটীকা: মানব জীবন একটি দীর্ঘ যাত্রা।

নারী; শ্লোক - ৩৫৮

নারীকে ভক্তি করি
নারীকেই পূজি।
নারীতেই ভালোবাসা
প্রেম স্নেহ খুঁজি।

পাদটীকা: নারীকূল ব্যতীত পুরুষকূল অপূর্ণাঙ্গ। মানব জন্ম এই উভয় কূলের যৌথ প্রেমের ফল, পুরুষ হিসেবে নারী বা মাতৃ কূলের প্রতি আমাদের সম্মান, ভক্তি প্রদর্শন করা উচিত। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


ছবি: কালার ক্রিসেন্ট

ভাইরাস; শ্লোক - ৪২৭

নিশ্বাসে ভাইরাস, বিশ্বাসে ভাইরাস;
ভাইরাস ছড়াছড়ি জগৎময়।
ভাইরাস মানুষকে অসুস্থ করে, মারে
ভাইরাসে তাই আমার ভয়।

পাদটীকা: এক ধরণের ভাইরাস হাঁচি, কাশি, নিশ্বাস বা স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়, অন্য ধরণের ভাইরাস বিশ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায়। এবং উভয় ভাইরাসই ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে এবং মানব জাতির জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ভাইরাস

ধর্মগুরু; শ্লোক - ১১

ধর্মগুরু জাহির করে, সে
আধ্যাত্মিক প্রজ্ঞার আধার।
আম জনতায় মূর্খ মানব
কেহ নাই আর তার সমতার।

পাদটীকা: কোন কোন ধর্মগুরু, ধর্মীয় জলসায় বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজেকে বিজ্ঞ এবং মহাজ্ঞানী হিসেবে জাহির করে, অনেক মিথ্যা এবং আজগুবি প্রসঙ্গের অবতারণা করে। ধর্মীয় বিষয়বস্তুকে বিশেষ্যায়িত করতে গিয়ে স্বয়ং ধর্মীয় বিষয়বস্তুকে খাটো করে লোক হাসায়।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ধর্মগুরু; শ্লোক - ১১


স্বর্গ; শ্লোক - ১১১

স্বর্গের বর্ণনা রূপকথায়
আর আছে ধর্ম কথায়।
সংসার-ভবে স্বর্গ মেলে
ভালো কাজ ও কথায়।

পাদটীকা: স্বর্গের বর্ণনা শুধুমাত্র রূপকথা বা ধর্মে বিরাজমান। আর স্বর্গের অস্তিত্ব ভূপৃষ্ঠে বর্তমান। স্বর্গ বিরাজমান পৃথিবীর প্রকৃতিতে, প্রাণীতে, মানব সংসারের ভালো কাজ, কথা ও কর্মে। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

স্বর্গ; শ্লোক - ১১১


মানুষ দর্শন; শ্লোক - ১১৩

নরকে নয় ধরার মাঝে মানবে,
মুখ ও মুখোশে হাসে শয়তান।
অনুরূপ, সাধারণ মানব বেশে
খুঁজলেই পাবে আছে ভগবান।

পাদটীকা: শয়তানের বৈশিষ্ট্য সম্বলিত প্রাণী শুধুমাত্র নরকে, বা দেবতার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত শুধুমাত্র স্বর্গে বিরাজমান নয়। উভয় সত্তার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত মানুষ আমাদের আশেপাশেই বিরাজমান। আর এই সত্তাদ্বয় কে সনাক্ত করতে আমাদের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাই যথেষ্ট।    
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

মানুষ দর্শন; শ্লোক - ১১৩


পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন