দ্বৈতচরিত্র; শ্লোক - ৫১২

যে যায় লঙ্কায়,
সেই হয় রাবণ।
রক্ষক হয়ে সে,
ধ্বংস করে বন।

পাদটীকা: ক্ষমতা ও লোভের দ্বৈতচরিত্র। “যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ”—অর্থাৎ কেউ যখন ক্ষমতার কেন্দ্রে পৌঁছে যায়, তখন সে নিজেই রাবণের মতো অহংকারী ও অত্যাচারী হয়ে ওঠে। আর “রক্ষক হয়ে সে, ধ্বংস করে বন”—অর্থাৎ, যাদের দায়িত্ব রক্ষা করার, অনেক সময় তারাই লোভ, স্বার্থ বা ক্ষমতার কারণে সর্বনাশের কারণ হয়ে ওঠে। প্রকৃতি মানুষকে ক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষা করে—যদি নৈতিকতা না থাকে, রক্ষকও ধ্বংসকারী হয়ে ওঠে। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দ্বৈতচরিত্র; শ্লোক - ৫১২


বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০

ইতিহাসে যত পতন হয়েছে
কারণ নিকটের আপন।
বিশ্বাস ঘাতক সেই জন হবে
যাহার প্রতি বিশ্বাস ঘন।

পাদটীকা: ঐতিহাসিক ঘটনা সমূহের আলোকে এই কথা জোর গলায় বলা যায় যে, আপন জনদের বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে অনেক শাসক এবং সম্রাজ্যের পতন ঘটেছে, তাই কাউকে মাত্রাতিরিক্ত বিশ্বাস করা উচিত নয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০


বঙ্গ বন্ধু; শ্লোক - ৪৭২

তিনি দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ডাক,
বাঙাল হলো এক, উঠলো বেঁজে রণের ঢাক।
পরাস্ত, লেজ গুটিয়ে পালালো পাক।
বজ্রকন্ঠী শেখ মুজিব, বঙ্গ বন্ধু নামেই ডাক।

পাদটীকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের এবং স্বাধীন বাংলাদেশ স্থাপনের পিছনে শেখ মুজিবুর রহমান অনন্য ভূমিকা পালন করেছিলেন বলেই, ইতিহাসে তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে স্বীকৃত।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বঙ্গ বন্ধু; শ্লোক - ৪৭২


প্রতিলিপি; শ্লোক - ৪৪৬

মানুষ তার প্রতিলিপি দেখে 
ঈশ্বরের মূর্তি গড়ে। 
আপন বাক্য প্রতিষ্ঠার তরে 
ঈশ্বরের নামে পড়ে। 

পাদটীকা: মানুষের ক্ষমতা সীমিত, মানুষের কাছে সে রূপ অকল্পনীয় যা সে দেখেনি বা শোনেনি। সসীম ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় আমরা কেবল সেগুলোর দৃশ্যায়ণ করতে পারি যা আমরা দেখেছি বা শুনেছি। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

প্রতিলিপি; শ্লোক - ৪৪৬


চিত্র নাট্য; শ্লোক - ৪৪৩

দুর্বল চিত্রনাট্যে নাটক সিনেমা হয় 
ইতিহাস নয়। 
যাহার বাস্তব ভিত্তি আছে, প্রমাণিত 
ইতিহাস হয়। 

পাদটীকা: কোন বিষয়কে সত্যি দাবি করলেই সেটা সত্যি হয়ে যায় না। কোন বিষয়কে সত্য প্রমান করতে গেলে তাহার বাস্তব ভিত্তি থাকতে হয়। আর কোন ঘটনাটি ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে সেটি সময়ই নির্বাচন করে নিবে। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

চিত্র নাট্য; শ্লোক - ৪৪৩


গান্ধী বনাম 'ঘান্দ্য'; শ্লোক - ৪৪১

আন্দোলন, রাজনীতি কথায় 
গান্ধী যখন নাম কামায়। 
তখন ঘান্দ্য এসে গান্ধী সাজে 
নাম ভাঙিয়ে দই জমায়। 

পাদটীকা: সমাজে প্রচলিত ভণ্ডামি ও নাম ভাঙানোর প্রবণতার ব্যঙ্গচিত্র। সত্যিকারের নেতা যেমন মহাত্মা গান্ধী আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইতিহাসে নিজের স্থান করে নিয়েছেন, তেমনি অনেকেই তাঁর নাম ও ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করেছেন। “ঘান্দ্য এসে গান্ধী সাজে”—এই কথাটি এমন সব লোককে নির্দেশ করে যারা আচরণে বা নীতিতে গান্ধীর ধারে কাছেও নয় বা খ‍্যাতিমান ব‍্যক্তিটির ধারের কাছেও নয়, কিন্তু বাহ্যিক বা সম্পর্কযুক্ত ভান করে সমাজে সম্মান ও সুযোগ আদায় করে। নাম নয়, কার্যই আসল পরিচয়; অন‍্যের মুখোশ লাগলেই কেউ মহৎ হয়ে ওঠে না। সুবিধাবাদীরা সর্ব যুগেই বিরাজমান। নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য এরা নানান কৌশল অবলম্বন করে। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

গান্ধী বনাম 'ঘান্দ্য'; শ্লোক - ৪৪১


বাঙালি; শ্লোক - ৭০

রাজার, ফিরিঙ্গীর, পাকির;
গোলামীর রক্ত বাঙ্গালীর স্বভাবে।
স্বাধীন দেশে কীটের গোলাম
আপন স্বভাবে, চেতনার অভাবে।

পাদটীকা: পরাধীনতা, তোষামদী এবং তৈলমর্দন বাঙালির ঐতিহ্যগত প্রবৃত্তি। এ জাতি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখে, ক্ষমতাবানের তোষামোদ করে, পোষা কুকুরের ন্যায় দৃশ্যমান বা অদৃশ্য মনিবের অধীনে সুশৃঙ্খল থাকে।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


ছবি: ব্রিটিশ লাইব্রেরি

নায়ক; শ্লোক - ৪৩

নায়ক যেথা দূর্বল, পরাস্ত; 
বিজয় খলনায়কে পায়। 
সেথা জয়গান নায়কের নয়, 
সবে খললায়কের গায়। 

পাদটীকা: দূর্বল বা পরাজিতরা সর্বদা গল্প বা ইতিহাসে নায়ক হিসেবে ঠাই পায় না। মানুষ সর্বদা বিজেতায় জয়কীর্তন করে, বিজেতাকে বিজয় মালা দিয়ে নায়ক হিসেবে বরণ করে। অর্থাৎ অধিকাংশ মানুষ দূর্বলের নয়, বরং সবল এবং বিজেতার পক্ষাবলম্বন করে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

নায়ক; শ্লোক - ৪৩


খিচুড়ি; শ্লোক - ৩৮

চালের সাথে ডাল মিশালে
নাম হয় খিচুড়ি রান্নার তন্ত্রে।
ধর্মের ও রাজনীতি মিশ্রণে
হয় বিষ; দূষণ শুরু রাষ্ট্রযন্ত্রে।

পাদটীকা: কোন রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ধর্ম এবং রাজনীতির সংমিশ্রণ সর্বস্তরের জনগণের জন্য মোটেও কোন দীর্ঘ মেয়াদি মঙ্গল বয়ে আনে না। ধর্ম এবং রাজনীতির সংমিশ্রনের ভয়াবহ ফল আমরা অতীত ইতিহাসে দেখেছি; বঙ্গভঙ্গ হয়েছে, হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা হয়েছে, শেষ পরিণতিতে ভারত ভাগ হয়েছে, বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, মানুষ আপন ভিটেমাটি ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছে। তাই, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ব্যবস্থা সকলের কাম্য। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

খিচুড়ি; শ্লোক - ৩৮



পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন