অহেতুক; শ্লোক - ৫০৯

না জেনে চাপার জোড়ে হুজুরগিরি হয়, 
পান্ডিত্য নয়। 
মুর্খের সাথে জ্ঞান বিজ্ঞান তর্ক বিতর্ক, 
সময় অপচয়। 
 
পাদটীকা: প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তি কোন সুনিদৃষ্ট তথ্য যাচাই করে, জেনে বুঝে কোন বিষয়ে অভিমত দিয়ে থাকে, অপর পক্ষে বিশ্বাসীগণ নিজেদের বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিশ্বাসের ভিত্তিতে মন গড়া অভিমত দিয়ে থাকে। জ্ঞানীদের সাথে আলোচনা করলে তাদের নিকট হতে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় জানা যায়। অপর পক্ষে যে পাত্র নিজেই শূণ্য তার নিকট হতে নেয়ার মত কিছুই থাকে না। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

অযথার্থ; শ্লোক - ৫০৯


কালের খাঁচা; শ্লোক - ৫০৫

আটকে আছি বর্তমানে ফাঁদে,
ভাবী ভবিষ্যতে ভ্রমে।
আতীত গেছে মুছে; বিভূতিরা
স্মৃতির পাতায় জমে।

পাদটীকা: আমরা সবাই মহাকালের বর্তমান সময়েই বর্তমান। আমরা ঘড়ির কাঁটার মতো ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হচ্ছি আর ভবিষ্যতটাকেও বর্তমানে রূপান্তরিত করছি। বর্তমান অতীতে রূপান্তরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বর্তমানকে হারাচ্ছি কালের গর্ভে। কোন কোন বর্তমান অতীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মুছে যাচ্ছে আমাদের স্মৃতি থেকে, আর কোন কোন অতীত ঠাঁই পাচ্ছে চিত্রে ও স্মৃতিতে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কালের খাঁচা; শ্লোক - ৫০৫


প্রতিকূলতা; শ্লোক - ৫০৪

হে প্রাণ, প্রতিকূলতায় লড়ো;
প্রকৃতি যুদ্ধার্থে মাতে, করে আহ্বান।
ভূবনে বিজয়ীরা বিরাজমান;
হও বিজয়ী নয়তো বিলুপ্ত, ম্রিয়মান। 

পাদটীকা: এ পৃথিবী চাষাবাদ যোগ্য জমি তুল্য, আর প্রাণ শশ্য তুল্য। একই জমিতে ভিন্ন ভিন্ন মৌসুমে ভিন্ন ভিন্ন শশ্য ফলে। শশ্য যদি পরজীবি বা প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তা রোগাক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বা বিলুপ্ত হয়ে যায়। অনুরূপ সময়ের স্রোতে আপন অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে বহু প্রাণী, উদ্ভিদ, রাষ্ট্র, সমাজ এবং সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। একদিন মানুষও বিলুপ্ত হয়ে যাবে যদি সে প্রতিকূলতাকে জয় করে তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

প্রতিকূলতা; শ্লোক - ৫০৪


কুরবানী; শ্লোক - ৫০৩

মনের পশু মনেই রইলো, 
খোদায় নাহি ভয়! 
নিরীহ প্রাণী কুরবানীতে 
খোদা কী তুষ্ঠ হয়? 

পাদটীকা: যে মানুষ মনের পশুত্বকে কুরবানী বা ত্যাগ করে ঈশ্বরকে জয় করতে ব্যর্থ। সেই মানুষের মনের পশুকে জিইয়ে রেখে নিরীহ চতুষ্পদী প্রাণীকে ঈশ্বরের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হত্যা বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কুরবানী; শ্লোক - ৫০৩


কূয়োর ব্যাঙ; শ্লোক - ৫০২

কূয়োর ব্যাঙ সাগরে আসে; 
সাগরের সুখ খায় নোনা জলে ভাসে। 
কূয়োর জ্ঞানে সাগরকে মাপে; 
অথৈই সুখে সর্দিগর্মি, খুশখুশ কাশে। 

পাদটীকা: কোন কোন স্বল্পজ্ঞানী ব্যক্তি ক্ষূদ্রগন্ডি পেরিয়ে যখন সৌভাগ্যক্রমে আপন যোগ্যতার চেয়ে বৃহত্তরগন্ডিতে পদার্পণ করে, তখন সে আনন্দে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। বৃহত্তরগন্ডি সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞানী হয়েও, যখন সে নিজেকে বিজ্ঞ, সর্ব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও শ্রেষ্ঠ হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করে, তখন সে মূলত আপন অজ্ঞতা এবং বৃহত্তরগন্ডিতে নিজেকে অযোগ্য হিসেবেই প্রকাশ করে। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কূয়োর ব্যাঙ; শ্লোক - ৫০২


ত্রাণ; শ্লোক - ৪৯৯

বিজ্ঞান দিবে সমাধা, ত্রাণ
শত্রু অদৃশ্যমান।
ঈশ্বর নয়, মানুষ আনবে
সুদিন, সমাধান।

পাদটীকা: বর্তমান বিশ্বের সকলেই এক কঠিন সময় পার করছে। বর্তমানে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটাই অনেক বড় বিষয়। করোনা থেকে পরিত্রাণের উপায় কোনো অদৃশ্য সত্তা নয় রক্ত মাংসের মানুষেরাই আবিষ্কার করেছে, শিগ্রই সুদিন আসবে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ত্রাণ; শ্লোক - ৪৯৯ 499

সুন্দর সত্তা; শ্লোক - ৪৯৮

কেউ দেখিতে সুন্দর
এর অর্থ এই নয় যে সে সুন্দর মানুষ।
সুন্দর হলো সেই গুণ
যা প্রকাশ করে ব্যক্তির কর্ম জ্ঞান-হুস।

পাদটীকা: বাহ্যিক সৌন্দর্য ব্যক্তির বাহ্যিক অংশে দৃশ্যমান যা আমরা চক্ষু দ্বারা উপলব্ধ করি, এই রূপ ব্যক্তির অন্তর্নিহিত স্বত্তাকে সর্বদা প্রতিনিধিত্ব করে না। ব্যক্তির অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য ব্যক্তির আচরণে প্রকাশ পায়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সুন্দর সত্তা; শ্লোক - ৪৯৮

ধর্মানুভূতি; শ্লোক - ৪৯৭

ধার্মিকের অভিযোগ, “ধর্মীয় বিশ্বাস
হয়েছে আহত, ধর্মাবতার হয়েছে নত”।
ধর্ম মতে, “দৃঢ় বিশ্বাসী স্বর্গ লোকে;
নরকে যাবে, দুর্বল বিশ্বাসী আছে যত”।

পাদটীকা: যা কিছু দুর্বল, ঠুনকো তা সহজেই আঘাতপ্রাপ্ত হয় বা আহত হয়। আর যা কিছু মজবুত তা শত আঘাতেও টিকে থাকে। কোন ধার্মিক যদি অভিযোগ করে যে তার ধর্মানুভূতি আহত হয়েছে। তাহলে বুঝতে হবে, সে স্রষ্টা কর্তৃক ঈমানী দৃঢ়তা পরীক্ষাতেও অকৃতকার্য হবে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ধর্মানুভূতি; শ্লোক - ৪৯৭


ধর্মীয় ভিত্তি; শ্লোক - ৪৯৪

ধরম তোমার ছিনিয়ে নিবে
চিন্তার স্বাধীনতা।
ঈশ্বরের নামে বিশ্বাস করাবে
মানুষের বলা কথা।
 
পাদটীকা: ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, এখানে মানুষের জ্ঞান এবং মুক্ত ভাবনা ভয়ের সীমানায় আবদ্ধ। মানুষের বলে যাওয়া কথা সমূহ, ধর্মে ঈশ্বরের কথা হিসেবে বিশ্বাস করানো হয়। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ধর্মীয় ভিত্তি; শ্লোক - ৪৯৪


শত্রুতা ও ঘাতকতা; শ্লোক - ৪৯৩

শত্রু করে শত্রুতা,
বিশ্বাস ঘাতকতা নয়।
বিশ্বাস ঘাতক সেই
যাকে বিশ্বাস করা হয়।

পাদটীকা: "শত্রু এবং বিশ্বাস ঘাতক" শব্দ দুটি সমর্থক হলেও এর অর্থ পুরোপুরি এক নয়, শত্রু হলেন তিনি যিনি শত্রুতা করেন আর বিশ্বাস ঘাতক হলেন তিনি যিনি বিশ্বাস ঘাতকতা করেন।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

শত্রুতা ও ঘাতকতা; শ্লোক - ৪৯৩


জ্যোতিষী; শ্লোক - ৪৯২

যে জন জ্যোতিষী আপন ভাগ্য
নির্ণয় করিতে নাহি জানে।
জ্যোতিষী তাহার পদবী হলেও,
বিজ্ঞ জনে তাকে না মানে।

পাদটীকা: যে জ্যোতিষী আপন ভাগ্যের নির্ণয় বা পরিবর্তন করতে জানে না, সাধারণত তার করা ভাগ্য পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ বাণীতে কোন বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন লোক বিশ্বাস করে না।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

জ্যোতিষী; শ্লোক - ৪৯২


বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০

ইতিহাসে যত পতন হয়েছে
কারণ নিকটের আপন।
বিশ্বাস ঘাতক সেই জন হবে
যাহার প্রতি বিশ্বাস ঘন।

পাদটীকা: ঐতিহাসিক ঘটনা সমূহের আলোকে এই কথা জোর গলায় বলা যায় যে, আপন জনদের বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে অনেক শাসক এবং সম্রাজ্যের পতন ঘটেছে, তাই কাউকে মাত্রাতিরিক্ত বিশ্বাস করা উচিত নয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০


দংশন; শ্লোক - ৪৮৮

ভাবিয়া বুঝিয়া বিশ্বাস করি;
আপন দন্ত জিহব্বাকে দংশে।
অতি বিশ্বাসে ঘাতক জন্মে,
আপন রক্তে, আপন বংশে।

পাদটীকা: কাউকে হুট্ করে আপন ভেবে বিশ্বাস করা উচিত নয়। আপন দাঁত যেমন আপন জিহ্বাকে কামড় দেয় অনুরূপ, আপন জন ভাবা ব্যক্তিরাই বিশ্বাস ঘাতক হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দংশন; শ্লোক - ৪৮৮ 488


কয়লা; শ্লোক - ৪৮৬

যদি হয় কাপড় নোংরা,
তা ধৌত করলে হবে পরিষ্কার।
যদি কালো কয়লা ধোও,
হইবে ক্রমশ ময়লা আবিষ্কার।

পাদটীকা: কোন বস্তু নোংরা হলে, তা যথাযথ ভাবে ধুলে পরিষ্কার হয়। কিন্তু যে ব্যক্তির আত্ম প্রকৃতি নোংরা, তাঁকে পবিত্র জলে স্নান করালেও তা দূর হয় না।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কয়লা; শ্লোক - ৪৮৬ 486


নীতি হীন; শ্লোক - ৪৭৭

চরিত্রহীনে যেথা প্রণেতা
চারিত্রিক সনদ;
নীতিকথা শোনায় সেথা
ঘুষ নিয়ে নগদ।

পাদটীকা: চরিত্রহীন ব্যক্তি যদি চারিত্রিক সনদের প্রনয়ণকারী হয়, তাহলে সে সনদের গ্রহণ যোগ্যতা প্রশ্ন বিদ্ধ হয়। অনুরূপ দূর্নীতিবানের মুখে নীতি কথা বিদ্রুপাত্বক কৌতুক
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

নীতি হীন; শ্লোক - ৪৭৭


তিন বাঙাল; শ্লোক - ৪৬১

যদি থাকে তিন বাঙাল;
এক জন এ দলে, অন্য জন ও দলে।
তৃতীয় জন সুবিধাবাদী
সুবিধার আশ্বাস পেলেই নামে জলে।

পাদটীকা: শুরু থেকেই বাঙালদের মাঝে সাম্যের অভাব, বিভক্ত বংশ পদবীতে, বিভক্ত বিশ্বাসের বিষে, এপার-ওপারে বিভক্তির শেষে বিভক্ত ভিন্ন নাগরিকত্বে। এর মাঝে এক শ্রেণী সুবিধাবাদী, যেখানে স্বার্থের মুলা, সেখানেই পাতে কুলা। বাঙাল কেবল মাত্র তখনই এক ছাতার নীচে অবস্থান করে যখন কোন অবাঙালী শিলা বৃষ্টি নিক্ষেপ করে, এরপর পুনরায় যে যার অবস্থানে।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

তিন বাঙাল; শ্লোক - ৪৬১



বাঙাল চরিত্র; শ্লোক - ৪৬০

বাঙাল বোঝে কম
বলে বেশি।
মগজ খাটায় কম
শক্ত পেশী। 

পাদটীকা: কোন কোন ব্যক্তি বিষয়বস্তু না বুঝেই কথা বলে এবং বুদ্ধিহীনতার পরিচয় দেয়, অপর পক্ষে গায়ের জোড়েই নিজেকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে দাবি করে।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বাঙাল চরিত্র; শ্লোক - ৪৬০

বাঙাল জন্ম; শ্লোক - ৪৫৯

বাঙাল হয়ে না জন্মালে জানা হতো না
বাঙাল বড়ই নির্বোধ জাতি!
জ্ঞানী সংখ্যালঘু; জননেতা মাথা মোটা
চামচারা ফুলায় বুকের ছাতি।

পাদটীকা: বাঙাল হিসেবে গর্ব করার মত যেমন অনেক বিষয় আছে, তেমনি আমাদের অনুতাপের তালিকাটাও বেশ লম্বা। এখানে বাঙাল জ্ঞানী গুণী জনেরা সংখ্যালঘু, আর নির্বোধেরা সংখ্যাগুরু। এই সংখাগুরুদের নিয়ন্ত্রণ করেই রাজনীতির খেলা চলে।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বাঙাল; শ্লোক - ৪৫৯


সুখ দুঃখ; শ্লোক - ৪৫৮

যে অনুভূতি আবেগ
আনন্দ যোগায় সেটাই হলো সুখ।
যে অনুভূতি আবেগ
ভোগায় ব্যথায় সেটাই হলো দুঃখ।

পাদটীকা: সুখ দুঃখ হলো অনুভূতি যা আমরা ইন্দ্রিয় দ্বারা উপলব্ধি করি। এর মাঝে একটি আনন্দদায়ক, অন্যটি বেদনা দায়ক।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সুখ দুঃখ; শ্লোক - ৪৫৮


বঙ্গ দেশ; শ্লোক - ৪৫৭

বঙ্গ দেশের জনসংখ্যা কোটি কোটি
তন্মধ্যে মানুষ কিছু হাতে গোনা।
ক্ষমতাবানেরা সেথা পরজীবী কীট;
সে ভূমি উর্বর ফলায় শশ্য সোনা।

পাদটীকা: বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনামূলক আলোচনায় দক্ষ জনশক্তি সেখানে অপর্যাপ্ত। সোনার বাংলার সোনা অযোগ্য রাজনীতিকের হাতে, দুর্নীতিবাজ ক্ষমতাবানদের দখলে।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বঙ্গ দেশ; শ্লোক - ৪৫৭


পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন