রূপান্তরের আশ্বাস; শ্লোক - ৫১৪

কঠিন বরফ গলে যায়,
হয়ে যায় তরল।
কঠিন অংক চর্চা করো
হয়ে যাবে সরল।

পাদটীকা: সময়ের সাথে ধৈর্যশীল হয়ে অধ্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ। যেমন কঠিন বরফ সময় ও উত্তাপে গলে গিয়ে তরলে রূপ নেয়, তেমনি জটিল অংক বা সমস্যাও ধীরে ধীরে মনোযোগ ও চেষ্টায় সহজ হয়ে ওঠে। কোনো কিছুই স্থায়ীভাবে কঠিন নয়; সময়, অধ্যবসায় ও মনোযোগ থাকলে জটিলতা সরলতায় রূপ নিতে বাধ্য। জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোতেও হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরে চেষ্টা করলে কঠিনতম কাজও সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

রূপান্তরের আশ্বাস; শ্লোক - ৫১৪


সময়ের গতি; শ্লোক - ৫১৩

সময় বয়ে যায়
বয়ে যায় বেলা।
একদা হবে শেষ
জগতের খেলা।

পাদটীকা: সময়ের অনিবার্য গতি এবং জীবনের ক্ষণস্থায়ীতার উপলব্ধি। সময় ও বেলা যেন অবিরাম স্রোতের মতো বয়ে চলে—নিরবধি, অপ্রতিরোধ্য। আর সেই স্রোতেরই একপ্রান্তে অপেক্ষা করে অন্তিম মুহূর্ত, যেখানে একদিন শেষ হয়ে যাবে পৃথিবীর সব কোলাহল, প্রতিযোগিতা ও মায়ার খেলা। জীবন অনিত্য, আর এই অনিত্যতার মাঝেই লুকিয়ে আছে জীবনের প্রকৃত তাৎপর্য। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সময়ের গতি; শ্লোক - ৫১৩

দ্বৈতচরিত্র; শ্লোক - ৫১২

যে যায় লঙ্কায়,
সেই হয় রাবণ।
রক্ষক হয়ে সে,
ধ্বংস করে বন।

পাদটীকা: ক্ষমতা ও লোভের দ্বৈতচরিত্র। “যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ”—অর্থাৎ কেউ যখন ক্ষমতার কেন্দ্রে পৌঁছে যায়, তখন সে নিজেই রাবণের মতো অহংকারী ও অত্যাচারী হয়ে ওঠে। আর “রক্ষক হয়ে সে, ধ্বংস করে বন”—অর্থাৎ, যাদের দায়িত্ব রক্ষা করার, অনেক সময় তারাই লোভ, স্বার্থ বা ক্ষমতার কারণে সর্বনাশের কারণ হয়ে ওঠে। প্রকৃতি মানুষকে ক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষা করে—যদি নৈতিকতা না থাকে, রক্ষকও ধ্বংসকারী হয়ে ওঠে। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দ্বৈতচরিত্র; শ্লোক - ৫১২


ধর্মীয় প্রভাব; শ্লোক - ৫১১

গো দুগ্ধ অপচয় করে,
গো মূত্র করে পান।
ধর্মের প্রভাবে মানুষ,
সন্ত্রাস বা বোহেমিয়ান।

পাদটীকা: ধর্মীয় গোঁড়ামি ও অন্ধ বিশ্বাসের এক তীব্র সমালোচনা। মানুষ যখন যুক্তি ও মানবিকতা ভুলে কেবল ধর্মীয় মোড়কে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, তখন সে এমন কাজ করে যা বিবেকবুদ্ধির পরিপন্থী—যেমন পুষ্টিকর গরুর দুধ অপচয় করা, অথচ গরুর মূত্রকে ওষুধ বা পূজার উপকরণ হিসেবে পান করা। এই প্রবণতা কখনো সন্ত্রাসে, আবার কখনো অদ্ভুত বোহেমিয়ান জীবনধারায় রূপ নিতে পারে। যুক্তিবাদী ও মানবিক ধর্মচর্চার গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে মূলে থাকবে জ্ঞান, দয়া ও সাম্য। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।



অতিরিক্ততা; শ্লোক - ৫১০

অতি লোভে হয়
তাঁতি নষ্ট।
অতি আলোতে
হয় পথভ্রষ্ট।

পাদটীকা: জীবনের ভারসাম্যের গুরুত্ব রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। “অতি লোভে তাঁতি নষ্ট”—মানে হলো, সীমাহীন লোভ একজন দক্ষ ব্যক্তিকেও পতনের পথে নিয়ে যেতে পারে। ঠিক তেমনি, “অতি আলোতে হয় পথভ্রষ্ট”—অতিরিক্ত জ্ঞান বা নির্দেশনার চাপেও মানুষ দিশেহারা হতে পারে, যেমন অতিরিক্ত আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায়। জীবনের যেকোনো বিষয়ে অতিরিক্ততা ক্ষতিকর। পরিমিতি বোধ ও সংযমই প্রকৃত প্রজ্ঞার পরিচয়। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

অতিরিক্ততা; শ্লোক - ৫১০


অহেতুক; শ্লোক - ৫০৯

না জেনে চাপার জোড়ে হুজুরগিরি হয়, 
পান্ডিত্য নয়। 
মুর্খের সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞান তর্ক-বিতর্ক, 
সময় অপচয়। 
 
পাদটীকা: জোরে কথা বললেই কেউ জ্ঞানী হয় না। অনেক সময় মানুষ না জেনেও উচ্চস্বরে কথা বলে বা কথার দাপটে নিজেকে ‘হুজুর’ বা পণ্ডিত প্রমাণ করতে চায়। কিন্তু প্রকৃত পাণ্ডিত্য আসে বিনয়, যুক্তি ও সত্যজ্ঞান থেকে। পাশাপাশি, যারা জ্ঞানের আলো থেকে দূরে থেকে যুক্তিহীন বিতর্কে লিপ্ত থাকে, তাদের সঙ্গে তর্ক করা একান্তই সময়ের অপচয়। জ্ঞানচর্চার প্রকৃত মানসিকতা ও আলোচনার সঠিক পরিবেশ থাকা সবার জন্য জরুরি। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

অহেতুক; শ্লোক - ৫০৯


কালের খাঁচা; শ্লোক - ৫০৫

আটকে আছি বর্তমানে ফাঁদে,
ভাবী ভবিষ্যতে ভ্রমে।
আতীত গেছে মুছে; বিভূতিরা
স্মৃতির পাতায় জমে।

পাদটীকা: আমরা সবাই মহাকালের বর্তমান সময়েই বর্তমান। আমরা ঘড়ির কাঁটার মতো ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হচ্ছি আর ভবিষ্যতটাকেও বর্তমানে রূপান্তরিত করছি। বর্তমান অতীতে রূপান্তরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বর্তমানকে হারাচ্ছি কালের গর্ভে। কোন কোন বর্তমান অতীতে রূপান্তরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মুছে যাচ্ছে আমাদের স্মৃতি থেকে, আর কোন কোন অতীত ঠাঁই পাচ্ছে চিত্রে ও স্মৃতিতে। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কালের খাঁচা; শ্লোক - ৫০৫


প্রতিকূলতার আহ্বান; শ্লোক - ৫০৪

হে প্রাণ, প্রতিকূলতায় লড়ো;
প্রকৃতি যুদ্ধার্থে মাতে, করে আহ্বান।
ভূবনে বিজয়ীরা বিরাজমান;
হও বিজয়ী নয়তো বিলুপ্ত, ম্রিয়মান। 

পাদটীকা: এ পৃথিবী চাষাবাদ যোগ্য জমি তুল্য, আর প্রাণ শস‍্য তুল্য। একই জমিতে ভিন্ন ভিন্ন মৌসুমে ভিন্ন ভিন্ন শস‍্য ফলে। শস‍্য যদি পরজীবি বা প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তা রোগাক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বা বিলুপ্ত হয়ে যায়। অনুরূপ সময়ের স্রোতে আপন অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে বহু প্রাণী, উদ্ভিদ, সমাজ, রাষ্ট্র এবং সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। একদিন মানুষও বিলুপ্ত হয়ে যাবে যদি সে প্রতিকূলতাকে জয় করে তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

প্রতিকূলতার আহ্বান; শ্লোক - ৫০৪


কুরবানী; শ্লোক - ৫০৩

মনের পশু মনেই রইলো, 
খোদায় নাহি ভয়! 
নিরীহ প্রাণী কুরবানীতে 
খোদা কী তুষ্ঠ হয়? 

পাদটীকা: যে মানুষ মনের পশুত্বকে কুরবানী বা ত্যাগ করে ঈশ্বরকে জয় করতে ব্যর্থ। সেই মানুষের মনের পশুকে জিইয়ে রেখে নিরীহ চতুষ্পদী প্রাণীকে ঈশ্বরের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হত্যা বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। যে মানুষের মনের পশুত্ব রয়ে যায়, যার মধ্যে করুণা, সহানুভূতি ও খোদাভীতি নেই, সে যদি শুধু রীতির বশে নিরীহ প্রাণী কুরবানী করে, তবে তাতে ঈশ্বর কি তুষ্ট হন? বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতার চেয়ে অন্তরের পবিত্রতা অধিক মূল্যবান—আত্মশুদ্ধি ও সহমর্মিতাই প্রকৃত পূজা। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কুরবানী; শ্লোক - ৫০৩


কূপমণ্ডূকের সমুদ্রযাত্রা; শ্লোক - ৫০২

কূয়োর ব্যাঙ সাগরে আসে; 
সাগরের সুখ খায় নোনা জলে ভাসে। 
কূয়োর জ্ঞানে সাগরকে মাপে; 
অথৈই সুখে সর্দিগর্মি, খুশখুশ কাশে। 

পাদটীকা: কোন কোন স্বল্পজ্ঞানী ব্যক্তি ক্ষূদ্রগন্ডি পেরিয়ে যখন সৌভাগ্যক্রমে আপন যোগ্যতার চেয়ে বৃহত্তরগন্ডিতে পদার্পণ করে, তখন সে আনন্দে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। বৃহত্তরগন্ডি সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞানী হয়েও, যখন সে নিজেকে বিজ্ঞ, সর্ব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও শ্রেষ্ঠ হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করে, তখন সে মূলত আপন অজ্ঞতা এবং বৃহত্তরগন্ডিতে নিজেকে অযোগ্য হিসেবেই প্রকাশ করে। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কূপমণ্ডূকের সাগরযাত্রা; শ্লোক - ৫০২


ত্রাণ; শ্লোক - ৪৯৯

বিজ্ঞান দিবে সমাধা, ত্রাণ
শত্রু অদৃশ্যমান।
ঈশ্বর নয়, মানুষ আনবে
সুদিন, সমাধান।

পাদটীকা: বর্তমান বিশ্বের সকলেই এক কঠিন সময় পার করছে। বর্তমানে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটাই অনেক বড় বিষয়। করোনা থেকে পরিত্রাণের উপায় কোনো অদৃশ্য সত্তা নয় রক্ত মাংসের মানুষেরাই আবিষ্কার করেছে, শিগ্রই সুদিন আসবে। কারণ, অদৃশ্য কোনো ঈশ্বর নয়, বরং মানুষ ও তার বিজ্ঞানই সংকটের প্রকৃত সমাধান আনতে সক্ষম। অদৃশ্য শত্রু—হোক তা ভাইরাস, দূষণ, বা অজ্ঞানতা—এর বিরুদ্ধে বিজ্ঞানই হাতিয়ার। এখানে ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বাস নয়, বরং অন্ধ বিশ্বাসের বিপরীতে যুক্তিবাদী, মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা—যেখানে সুদিন আসে মানুষ ও মননের হাত ধরে। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ত্রাণ; শ্লোক - ৪৯৯


সুন্দর সত্তা; শ্লোক - ৪৯৮

কেউ দেখিতে সুন্দর
এর অর্থ এই নয় যে সে সুন্দর মানুষ।
সুন্দর হলো সেই গুণ
যা প্রকাশ করে ব্যক্তির কর্ম জ্ঞান-হুস।

পাদটীকা: বাহ্যিক সৌন্দর্য ব্যক্তির বাহ্যিক অংশে দৃশ্যমান যা আমরা চক্ষু দ্বারা উপলব্ধ করি, এই রূপ ব্যক্তির অন্তর্নিহিত স্বত্তাকে সর্বদা প্রতিনিধিত্ব করে না। চোখে দেখার মতো সুন্দর হলেই কেউ প্রকৃত অর্থে “সুন্দর মানুষ” হয় না।সৌন্দর্য এক গুণ, যা বাইরের চাকচিক্যে নয়, বরং মানুষের ব্যবহার, চিন্তা ও কার্যকলাপে প্রতিফলিত হয়। সত্যিকারের সৌন্দর্য প্রস্ফুটিত হয় তার চরিত্র, জ্ঞান, অনুভূতি ও কর্মের মাধ্যমে। ব্যক্তির অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য ব্যক্তির আচরণে প্রকাশ পায়। বাহ্যিকতা নয়, বরং আভ্যন্তরীণ মূল্যবোধ গুরুত্বপূর্ণ। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সুন্দর সত্তা; শ্লোক - ৪৯৮


ধর্মানুভূতি; শ্লোক - ৪৯৭

ধার্মিকের অভিযোগ, “ধর্মীয় বিশ্বাস
হয়েছে আহত, ধর্মাবতার হয়েছে নত”।
ধর্ম মতে, “দৃঢ় বিশ্বাসী স্বর্গ লোকে;
নরকে যাবে, দুর্বল বিশ্বাসী আছে যত”।

পাদটীকা: একটি বিশেষ শ্রেণির ধার্মিক প্রায়শই অভিযোগ করে—তাদের ধর্মীয় অনুভূতি আহত হয়েছে, ধর্মাবতারকে অপমান করা হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিক্রিয়া অনেকটাই আত্মকেন্দ্রিক আবেগের বহিঃপ্রকাশ। অথচ ধর্ম নিজেই বলে—দৃঢ় বিশ্বাসীই স্বর্গের যোগ্য, আর দুর্বল বিশ্বাসী নরকে নিক্ষিপ্ত হবে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়: বিশ্বাস কি এতটাই দুর্বল যে সামান্য প্রশ্ন বা মতভেদেই তা ভেঙে পড়ে? নরক ও স্বর্গের চাবিকাঠি-ই বা কার হাতে?

এই ভাবনাগুলো এক গভীর ব্যঙ্গচিন্তার জন্ম দেয়—ধর্ম নয়, সংকটে পড়েছে মানুষের মনোভাব ও একচেটিয়া অধিকারবোধ। কারণ, যা সত্যিকারে দৃঢ়—তা হাজারো প্রশ্নেও নত হয় না; আর যা ঠুনকো, তা সামান্য স্পর্শেই আহত হয়। যদি কোনো ধার্মিক তার ধর্মানুভূতি আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন, তবে ধরে নেওয়া যায়—ঈশ্বরপ্রদত্ত ঈমানের পরীক্ষাতেও তিনি ব্যর্থ হবেন, কারণ তার বিশ্বাস মজবুত নয়, কেবল আবেগনির্ভর। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


ধর্মানুভূতি; শ্লোক - ৪৯৭


ধর্মীয় ভিত্তি; শ্লোক - ৪৯৪

ধরম তোমার ছিনিয়ে নিবে
চিন্তার স্বাধীনতা।
ঈশ্বরের নামে বিশ্বাস করাবে
মানুষের বলা কথা।
 
পাদটীকা: ধর্মের নামে চিন্তার স্বাধীনতা হরণ এবং অন্ধ বিশ্বাস চাপিয়ে দেওয়ার এক প্রখর সমালোচনা। ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, এখানে মানুষের জ্ঞান এবং মুক্ত ভাবনা ভয়ের সীমানায় আবদ্ধ। কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা প্রচারক, স্বাধীন চিন্তাকে ছিনিয়ে নিতে চায়— নিজের বোঝাপড়া নয়, বরং তারা ঈশ্বরের নামে বিশ্বাস করাতে চায় এমন কথাগুলো, যা মানুষই তৈরি করেছে। মানুষের বলে যাওয়া কথা সমূহ, ধর্মে ঈশ্বরের কথা হিসেবে বিশ্বাস করানো হয়। ঈশ্বর কি সত্যিই চান, আমরা নিজে না ভেবে কেবল অন্যের মুখে শোনা মত অনুসরণ করি? মানুষের উচিৎ অন্ধভাবে কোন কিছু অনুসরণ না করে, বরং যুক্তিবোধ, চিন্তা ও মানবিকতাকে ধর্মচর্চার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ধর্মীয় ভিত্তি; শ্লোক - ৪৯৪


শত্রুতা ও ঘাতকতা; শ্লোক - ৪৯৩

শত্রু করে শত্রুতা,
বিশ্বাস ঘাতকতা নয়।
বিশ্বাস ঘাতক সেই
যাকে বিশ্বাস করা হয়।

পাদটীকা: "শত্রু এবং বিশ্বাস ঘাতক" শব্দ দুটি সমর্থক হলেও এর অর্থ পুরোপুরি এক নয়, শত্রু হলেন তিনি যিনি শত্রুতা করেন আর বিশ্বাস ঘাতক হলেন তিনি যিনি বিশ্বাস ঘাতকতা করেন। শত্রুর কাছ থেকে শত্রুতা প্রত্যাশিত, তাই তার আঘাত ততটা বেদনার নয়। কিন্তু যাকে বিশ্বাস করা হয়—যে আপনজন, প্রিয় বা ঘনিষ্ঠ—তার বিশ্বাসভঙ্গই প্রকৃত ঘাতকতা। কারণ, সেই আঘাত আসে ভরসার ভিতর থেকে, যেখানে প্রতিরক্ষার কোনো প্রস্তুতি থাকে না। সবাই শত্রু নয়, কিন্তু সবাই বন্ধুও নয়। সত্যিকারের বিশ্বাসযোগ্যতা পরীক্ষা হয় সময়ে ও সংকটে। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

শত্রুতা ও ঘাতকতা; শ্লোক - ৪৯৩


জ্যোতিষী; শ্লোক - ৪৯২

যে জন জ্যোতিষী আপন ভাগ্য
নির্ণয় করিতে নাহি জানে।
জ্যোতিষী তাহার পদবী হলেও,
বিজ্ঞ জনে তাকে না মানে।

পাদটীকা: যে জ্যোতিষী আপন ভাগ্যের নির্ণয় বা পরিবর্তন করতে জানে না, সাধারণত তার করা ভাগ্য পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ বাণীতে কোন বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন লোক বিশ্বাস করে না।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

জ্যোতিষী; শ্লোক - ৪৯২


বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০

ইতিহাসে যত পতন হয়েছে
কারণ নিকটের আপন।
বিশ্বাস ঘাতক সেই জন হবে
যাহার প্রতি বিশ্বাস ঘন।

পাদটীকা: ঐতিহাসিক ঘটনা সমূহের আলোকে এই কথা জোর গলায় বলা যায় যে, আপন জনদের বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে অনেক শাসক এবং সম্রাজ্যের পতন ঘটেছে, তাই কাউকে মাত্রাতিরিক্ত বিশ্বাস করা উচিত নয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০


দংশন; শ্লোক - ৪৮৮

ভাবিয়া বুঝিয়া বিশ্বাস করি;
আপন দন্ত জিহব্বাকে দংশে।
অতি বিশ্বাসে ঘাতক জন্মে,
আপন রক্তে, আপন বংশে।

পাদটীকা: কাউকে হুট্ করে আপন ভেবে বিশ্বাস করা উচিত নয়। আপন দাঁত যেমন আপন জিহ্বাকে কামড় দেয় অনুরূপ, আপন জন ভাবা ব্যক্তিরাই বিশ্বাস ঘাতক হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দংশন; শ্লোক - ৪৮৮ 488


কয়লা; শ্লোক - ৪৮৬

যদি হয় কাপড় নোংরা,
তা ধৌত করলে হবে পরিষ্কার।
যদি কালো কয়লা ধোও,
হইবে ক্রমশ ময়লা আবিষ্কার।

পাদটীকা: কোন বস্তু নোংরা হলে, তা যথাযথ ভাবে ধুলে পরিষ্কার হয়। কিন্তু যে ব্যক্তির আত্ম প্রকৃতি নোংরা, তাঁকে পবিত্র জলে স্নান করালেও তা দূর হয় না।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কয়লা; শ্লোক - ৪৮৬ 486


নীতি হীন; শ্লোক - ৪৭৭

চরিত্রহীনে যেথা প্রণেতা
চারিত্রিক সনদ;
নীতিকথা শোনায় সেথা
ঘুষ নিয়ে নগদ।

পাদটীকা: চরিত্রহীন ব্যক্তি যদি চারিত্রিক সনদের প্রনয়ণকারী হয়, তাহলে সে সনদের গ্রহণ যোগ্যতা প্রশ্ন বিদ্ধ হয়। অনুরূপ দূর্নীতিবানের মুখে নীতি কথা বিদ্রুপাত্বক কৌতুক
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

নীতি হীন; শ্লোক - ৪৭৭


পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন