বিশ্বাস এবং ধোঁকা; শ্লোক - ৪৩৩

প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত আলোয় 
সব আঁধার, না যায় দেখা কিছু। 
অতীব মাত্রায় যেথায় থাকে বিশ্বাস, 
ধোঁকা সেথায় আসে পিছু পিছু। 

পাদটীকা: মাছের আবাসের জন্য পাত্রে পানি থাকা যেমন পূর্ব শর্ত, অনুরূপ ধোঁকা হওয়ার পূর্ব শর্ত হলো বিশ্বাস। ধোঁকা সেখানেই হয় যেখানে বিশ্বাস বা ভরসা থাকে, অর্থাৎ সে ব্যক্তি কখনোই ধোঁকা দিতে পারেনা যাকে কখনোই বিশ্বাস বা ভরসা করা হয় না। যাকে পরিমিত বিশ্বাস করা হয় সে ধোঁকা দিলে সহনীয় কষ্ট লাগে, তবে যদি কাউকে সীমাহীন বা অন্ধভাবে বিশ্বাস করা হয়, সে ধোঁকা দিলে অসহনীয় কষ্ট অনুভূত হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিশ্বাস এবং ধোঁকা

শত্রুতা ও ঘাতকতা; শ্লোক - ৪৯৩

শত্রু করে শত্রুতা,
বিশ্বাস ঘাতকতা নয়।
বিশ্বাস ঘাতক সেই
যাকে বিশ্বাস করা হয়।

পাদটীকা: "শত্রু এবং বিশ্বাস ঘাতক" শব্দ দুটি সমর্থক হলেও এর অর্থ পুরোপুরি এক নয়, শত্রু হলেন তিনি যিনি শত্রুতা করেন আর বিশ্বাস ঘাতক হলেন তিনি যিনি বিশ্বাস ঘাতকতা করেন।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

শত্রুতা ও ঘাতকতা; শ্লোক - ৪৯৩


বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০

ইতিহাসে যত পতন হয়েছে
কারণ নিকটের আপন।
বিশ্বাস ঘাতক সেই জন হবে
যাহার প্রতি বিশ্বাস ঘন।

পাদটীকা: ঐতিহাসিক ঘটনা সমূহের আলোকে এই কথা জোর গলায় বলা যায় যে, আপন জনদের বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে অনেক শাসক এবং সম্রাজ্যের পতন ঘটেছে, তাই কাউকে মাত্রাতিরিক্ত বিশ্বাস করা উচিত নয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিশ্বাস ঘাতক; শ্লোক - ৪৯০


দংশন; শ্লোক - ৪৮৮

ভাবিয়া বুঝিয়া বিশ্বাস করি;
আপন দন্ত জিহব্বাকে দংশে।
অতি বিশ্বাসে ঘাতক জন্মে,
আপন রক্তে, আপন বংশে।

পাদটীকা: কাউকে হুট্ করে আপন ভেবে বিশ্বাস করা উচিত নয়। আপন দাঁত যেমন আপন জিহ্বাকে কামড় দেয় অনুরূপ, আপন জন ভাবা ব্যক্তিরাই বিশ্বাস ঘাতক হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দংশন; শ্লোক - ৪৮৮ 488


বিজ্ঞান ও বিশ্বাস; শ্লোক - ৪৩৬

বিজ্ঞান যত হইবে উন্নত; 
অন্ধবিশ্বাস ঘুচিবে তত। 
দৃষ্টির ছানি বিজ্ঞান দিবে তুলে 
অন্ধবিশ্বাস মানুষ যাবে ভুলে। 

পাদটীকা: সময়ের সাথে মানুষের জ্ঞানের পরিসীমা বাড়ছে, বিজ্ঞান উন্নত হচ্ছে। মানুষের অভিযান এখন পৃথিবী ছাড়িয়ে মহাশূণ্য ছাড়িয়ে অন্য গ্রহে, অজানা কে জানার তরে, আর সমস্যা কে সমাধানের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞান সদা সক্রিয়। পক্ষান্তরে অন্ধবিশ্বাস পুরোনো ধারণায় স্তব্ধ, পুরোনো সংস্কার নিয়ে ব্যস্ত। ক্রমশ মানুষের বিশ্বাস এবং জীবনে প্রচলিত অন্ধবিশ্বাস সংস্কারের পরিবর্তে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির প্রতি আস্থা চলমান। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিজ্ঞান ও বিশ্বাস শ্লোক

বিভীষণ; শ্লোক - ৪৩০

পরাজিত হয় রাবণ;
লঙ্কার গদি রাম নয় পায় বিভীষণ।
স্বজন ক্ষতির কারণ,
অন্ধবিশ্বাস, বিশ্বাস করিলে ভীষণ।

পাদটীকা: “ঘরের শত্রু বিভীষণ” পৌরাণিক গল্প কাহিনীর ভিত্তিতে একটি প্রচলিত প্রবাদ প্রবচন। কালে কালে আমাদের সমাজে বিভীষণ এর মত চরিত্রের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে, যেখানে ঘরের বিশ্বাস ভাজন সদস্যই ঘর ভাঙার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ঘরের শত্রু বিভীষণ

অপরিবর্তনীয়; শ্লোক - ৪২০

যে বাঙাল শিক্ষিত হয়েও,
পানি পড়ায় বিশ্বাস করে।
সে কার্টুন দেখে সভ্য হবে,
বিশ্বাস করি কেমন করে?

পাদটীকা: মানুষের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস দূরীকরণের সুশিক্ষার কোন বিকল্প নাই।  মানুষ যদি সুশিক্ষাকে ধারণ এবং আচরণে এর বহিঃপ্রকাশ না ঘটায় তাহলে কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্তি সম্ভব নয়।  
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

অপরিবর্তনীয়; শ্লোক - ৪২০

মিনি কাব্য - ২৭৪

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
কেউ সরল মনে বিশ্বাস করে,
এর অর্থ এই নয় সে বোকা।
কেউ সরল বিশ্বাস ভঙ্গ করিলো,
এর অর্থ ধোঁকাবাজ দিছে ধোঁকা।

ধর্মীয় ভিত্তি; শ্লোক - ৪৯৪

ধরম তোমার ছিনিয়ে নিবে
চিন্তার স্বাধীনতা।
ঈশ্বরের নামে বিশ্বাস করাবে
মানুষের বলা কথা।
 
পাদটীকা: ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, এখানে মানুষের জ্ঞান এবং মুক্ত ভাবনা ভয়ের সীমানায় আবদ্ধ। মানুষের বলে যাওয়া কথা সমূহ, ধর্মে ঈশ্বরের কথা হিসেবে বিশ্বাস করানো হয়। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ধর্মীয় ভিত্তি; শ্লোক - ৪৯৪


দৃঢ়তা; শ্লোক - ৫০০

যে বিশ্বাস ঠুনকো কথায় ভেঙ্গে যায়
তা ভেঙ্গে যাওয়াই ভালো।
যে প্রদীপ ঝড়ো বাতাসে টিকে থাকে
মনে এমন প্রদীপ জ্বালো।

পাদটীকা: যা ভঙ্গুর তা ভেঙে যাবে এটাই স্বাভাবিক, আর যা কিছু মজবুত তাই টিকে থাকবে। পৃথিবীতে দৃঢ় বিষয় বস্তু, ভিত্তিই কেবল টিকে থাকে, আর যা কিছু নশ্বর তা হারিয়ে যায় কালের স্রোতে। আমাদের এমন কিছুতেই বিশ্বাস করা উচিত যার দৃঢ়তা এবং ভিত্তি মজবুত।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দৃঢ়তা; শ্লোক - ৫০০

বিজ্ঞান বনাম ধর্ম; শ্লোক - ৪৮৯

ধর্ম শেখায় অন্ধ বিশ্বাস,
করে অন্ধ বিশ্বাসে মন নিমজ্জন।
বিজ্ঞান দেখায় শেখায়,
বিজ্ঞান জ্ঞানে আলোকিত মন।

পাদটীকা: জ্ঞানে বা অজ্ঞানে কেউ বিজ্ঞানকে অস্বীকার বা বিজ্ঞানের অবদানকে অস্বীকার করলে বিজ্ঞানীরা কখনোই বিজ্ঞান অবমাননার অভিযোগ আনবে না। অপর পক্ষে ধর্মের কোন অযৌক্তিক দ্বাবী এবং বর্ণনাকে অসত্য বললে ধার্মীকেরা ধর্মাদ্রোহীতার অভিযোগ আনে। বিজ্ঞান ধর্মাপেক্ষা উত্তম, উদার এবং বিশাল।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বিজ্ঞান বনাম ধর্ম; শ্লোক - ৪৮৯


রোগ; শ্লোক - ৪৬৮

চর্মতে যাহা হয়; ঘা, পঁচড়া, চুলকানী 
উহা সকলি চর্মরোগ। 
ধর্মের কারনে ত্রাস, বিবেক বুদ্ধিহীন 
উহা সকলি ধর্মরোগ। 

পাদটীকা: প্রতিটি রোগের যেমন ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গ থাকে এবং উপসর্গকে ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করা হয়, অনুরূপ ধর্মীয় বিশ্বাস কে ভিত্তি করে ব্যক্তির আচরণ, গতি প্রকৃতি, ও কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে ব্যক্তির ধর্মীয় বিস্বাসের স্বরূপ নির্ণয় করা সম্ভব। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

রোগ; শ্লোক - ৪৬৮


মাপকাঠি; শ্লোক - ১৪০

ধার্মিক বা অধার্মিক
ভালো মন্দের মাপকাঠি নয়।
ভালো - মন্দ নির্ণয়
ব্যক্তির কর্ম গুণ বিচারে হয়।

পাদটীকা: কোন কিছুতে বিশ্বাস স্থাপন করা বা না করা কখনো কারোর পরিচয় নয়, ব্যক্তির কর্ম ব্যক্তির সত্তার ভালো বা মন্দ নির্ণয়ের মাপকাঠি।

মাপকাঠি পরিমাপ

জ্যোতিষী; শ্লোক - ৪৯২

যে জন জ্যোতিষী আপন ভাগ্য
নির্ণয় করিতে নাহি জানে।
জ্যোতিষী তাহার পদবী হলেও,
বিজ্ঞ জনে তাকে না মানে।

পাদটীকা: যে জ্যোতিষী আপন ভাগ্যের নির্ণয় বা পরিবর্তন করতে জানে না, সাধারণত তার করা ভাগ্য পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ বাণীতে কোন বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন লোক বিশ্বাস করে না।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

জ্যোতিষী; শ্লোক - ৪৯২


মেধা এবং মানবতা; শ্লোক - ৪৩৭

যে মেধায় নাই মানবতার বাস 
মনুষ্যত্ব সেথা করে হাসফাস। 
সে মূর্খ ঢের উত্তম; যে জন সৎ 
মানুষে প্রাণে করে প্রেম বিশ্বাস। 

পাদটীকা: বুদ্ধিমান অসৎ ব্যক্তি অনেক ভয়ংকর হতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে মূর্খ এবং সৎ ব্যক্তি যথেষ্ট নিরাপদ এবং উত্তম। যে ব্যক্তির মাঝে মেধা, সততা এবং মানবতার বাস, সে ব্যক্তি অতি উত্তম। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।
মেধা এবং মানবতা শ্লোক

ধর্মানুভূতি; শ্লোক - ৪৯৭

ধার্মিকের অভিযোগ, “ধর্মীয় বিশ্বাস
হয়েছে আহত, ধর্মাবতার হয়েছে নত”।
ধর্ম মতে, “দৃঢ় বিশ্বাসী স্বর্গ লোকে;
নরকে যাবে, দুর্বল বিশ্বাসী আছে যত”।

পাদটীকা: যা কিছু দুর্বল, ঠুনকো তা সহজেই আঘাতপ্রাপ্ত হয় বা আহত হয়। আর যা কিছু মজবুত তা শত আঘাতেও টিকে থাকে। কোন ধার্মিক যদি অভিযোগ করে যে তার ধর্মানুভূতি আহত হয়েছে। তাহলে বুঝতে হবে, সে স্রষ্টা কর্তৃক ঈমানী দৃঢ়তা পরীক্ষাতেও অকৃতকার্য হবে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ধর্মানুভূতি; শ্লোক - ৪৯৭


সভ্য মানুষ; শ্লোক - ৪৭৬

ধর্ম না বানায় সভ্য মানুষ
যদি না সে নিজে সভ্য হয়।
ধর্মের কল তখনই নড়ে,
যখন মানুষ ধর্মে করে ভয়।

পাদটীকা: ধর্ম মানুষকে তখনই সভ্য বানাতে সক্ষম হয় যখন মানুষ স্বয়ং সভ্য হয়। ঈশ্বর তখনই শক্তিমান, যখন মানুষ ঈশ্বরের শক্তিতে বিশ্বাস করে। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সভ্য মানুষ; শ্লোক - ৪৭৬


মিনি কাব্য - ২৪৬

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
দূর্বল বিশ্বাস হাওয়ায় নড়ে,
বিশ্বাসী তাই হাওয়ায় ডরে।
ভিত্তি যদি হয় শক্ত মজবুত,
অটল থাকে আঘাতে নিযুত।

কুশীলব; শ্লোক - ২১৮

চলচ্চিত্র বা মঞ্চের অভিনয়,
নাটক রূপে সনাক্ত করা যায় সহজে।
জীবনের কক্ষপথে নাট্যকার,
কৌশল দেখায়, সত্যি ভাবে সকলে।

পাদটীকা: বাস্তব জীবনে অভিনেতাদের অভিনয় সর্বদা সনাক্ত করা সম্ভবপর হয় না। অধিকাংশ লোকজন সেটাকে সত্যি হিসেবে বিশ্বাস করে। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


ছবি: কাইল হেড

ধর্ম বন্দনা; শ্লোক - ৪২৯

পূরোহিতের বর্ণনাতে, রক্তপিপাশু কালী
মাতার স্বরূপ সুন্দরতম,
মহাদেবের গঞ্জিকা তাৎপর্যময় মহোত্তম।
অন্ধধার্মিক জপে নমঃ।

পাদটীকা: ধর্মগুরুদের বর্ণনা মতে, তাদের ধর্ম সকল বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানে পরিপূর্ণ। এবং অন্ধ ধার্মিকগণ ধর্মগুরুদের কাছ প্রাপ্ত তথ্য সমূহকে মহিমান্বিতময় হিসেবে বিশ্বাস এবং ভরসা করে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন