পরিষ্কার; শ্লোক - ৪৫৪

ময়লা জলে জিনিস ধুলে
কভু না হয় পরিষ্কার।
সুস্থ সমাজ গড়তে চাইলে
দুর্নীতি করো বহিষ্কার।

পাদটীকা: ক্ষমতার সুষম বন্টন এবং সুস্থ সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো দুর্নীতি। তাই সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে দূর্নীতি দমনের কোন বিকল্প নাই।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

পরিষ্কার; শ্লোক - ৪৫৪


প্রতিকূলতা; শ্লোক - ৫০৪

হে প্রাণ, প্রতিকূলতায় লড়ো;
প্রকৃতি যুদ্ধার্থে মাতে, করে আহ্বান।
ভূবনে বিজয়ীরা বিরাজমান;
হও বিজয়ী নয়তো বিলুপ্ত, ম্রিয়মান। 

পাদটীকা: এ পৃথিবী চাষাবাদ যোগ্য জমি তুল্য, আর প্রাণ শশ্য তুল্য। একই জমিতে ভিন্ন ভিন্ন মৌসুমে ভিন্ন ভিন্ন শশ্য ফলে। শশ্য যদি পরজীবি বা প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তা রোগাক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বা বিলুপ্ত হয়ে যায়। অনুরূপ সময়ের স্রোতে আপন অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে বহু প্রাণী, উদ্ভিদ, রাষ্ট্র, সমাজ এবং সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। একদিন মানুষও বিলুপ্ত হয়ে যাবে যদি সে প্রতিকূলতাকে জয় করে তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

প্রতিকূলতা; শ্লোক - ৫০৪


পিরানহা; শ্লোক - ১৯১

যে পুকুরের অধিকাংশ পিরানহা, 
সে পুকুরে নামতে লাগে ভয়। 
যদি অক্ষত না ফিরি, ক্ষতি করে; 
সর্বদা আতংক, মনে সংশয়। 

পাদটীকা: যে সমাজের অধিকাংশ মানুষ মানবিক শিক্ষার পরিবর্তে উগ্র মতাদর্শে দীক্ষিত হয়, মানবিকের পরিবর্তে ভিন্ন বিশেষ্যণে নিজেকে বিশেষায়িত করে, অন্য মতাদর্শের মানুষের প্রতি সহনশীলতার পরিবর্তে ঘৃণা লালণ করে। সে সমাজ ভিন্ন মতাদর্শীদের জন্য ঝুকিপূর্ণ স্থান।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

পিরানহা; শ্লোক - ১৯১


দেয়াল; শ্লোক - ২৪

মানুষ মানুষ দলাদলি ভেদাভেদ;
অতি ক্ষুদ্রতর হেতু।
মানুষের মাঝের দেয়াল ভাঙুক;
গড়ুক সেথায় সেতু।

পাদটীকা: রাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রে, সমাজ থেকে সমাজে, মানুষ থেকে মানুষ বিভক্ত; নানা স্বার্থে নানা কারণে। মানুষের মাঝে ভেদাভেদের দেয়াল পতিত হোক, এবং সেখানে স্থাপিত হোক বন্ধুত্বের সেতু।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দেয়াল; শ্লোক - ২৪


মিথ্যার রাজত্ব; শ্লোক - ৪৭৮

মিথ্যার সংখ্যা ক্রমশঃ ঘন,
আগাছায় বাগান হইবে বন।
সত্যের সততা হইবে পরাজিত
মিথ্যেবাদী শাসিবে জনগণ।

পাদটীকা: যে বাগানে ফুলগাছের তুলনায় আগাছার সংখ্যা বেশি সেটি কে বাগান না বলে জঙ্গল বলাই শ্রেয়, কারণ সে বাগান ভূমি আগাছাদের দখলে। যে সমাজে সৎলোক দূর্বল, সে সমাজ অসৎ লোকের অধীনে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

মিথ্যার রাজত্ব; শ্লোক - ৪৭৮


সত্য প্রতিষ্ঠা; শ্লোক - ৪১৪

মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা
অনৈতিকতার পরিচয়।
সত্য সর্বদা প্রতিষ্ঠিত হোক,
মিথ্যাকে কখনো নয়।

পাদটীকা: আমরা যদি সততা, ন্যায় কথা বা কাজের পক্ষে থাকি থাহলে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে সৎ কর্ম করতে, নয়তো সমাজ একদিন মিথ্যায় ভরে যাবে আর সততা দুষ্প্রাপ্য মূল্যবোধে পরিণত হবে। তাই, জেনে বুঝে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করা উচিত নয়। সত্যের পক্ষে সর্বদা থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হওয়া উচিত। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

নারীর পরিচয়; শ্লোক - ৩০৭

নারীর বহু পরিচয়;
ভালোবাসা প্রেমিকা,
কন্যা, জায়া, জননী,
দূর্গতিনাশিনী দূর্গা।

পাদটীকা: সমাজ, রাষ্ট্র, বা পৃথিবীর অর্ধাংশ হলো নারী। জগতে নারী আছে বলেই আমরা জন্ম গ্রহণ করি এবং বেঁচে থাকি। নারীকূল ব্যতীত পূরুষকূল অস্তিত্ব শূণ্য।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


ছবি: সোমকোয়ার বিক্রম

মিনি কাব্য - ৩২৩

মিনি কাব্য - ৩২৩
আরিফুর রহমান
-----------------
রোগাক্রারান্ত রাষ্ট্র সমাজ
যদিও থাকে উর্ধমূখী অর্থনীতি;
ব্যাঙ্ক ভান্ডার শূণ্য করে
পোঁকা মাকড়ের লাগামহীন দূর্নীতি।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর; শ্লোক - ৪৬৪

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে স্মরণ কর
নত মস্তক শ্রদ্ধা প্রাণ ভরে।
সমাজে নারীর অধিকারের তরে
গিয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র লড়ে। 

পাদটীকা: পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বাংলার নবজাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং একজন সমাজ সংস্কারক। তৎকালীন সময়ে বিধবা বিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষার প্রচলনকারী, একই সাথে বহুবিবাহ ও বাল্য বিবাহের মতো সামাজিক অভিশাপ দূরীকরণে অক্লান্ত সংগ্রাম করে গেছেন আর একারণেই যথোচিত শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁকে আমাদের স্মরণে রাখা উচিত।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর; শ্লোক - ৪৬৪


বঙ্গদেশ; শ্লোক - ৪৭৫

বঙ্গ দেশে, 
চোরের হাতে হাতকড়া পড়াইবে যে,
রঙ্গ হেসে, 
সাধুর সে হাত চোরে বাধিয়া রাখে।

পাদটীকা: যে সমাজে ন্যায় বিচারকের তুলনায় দুর্নীতিবানেরা ক্ষমতাবান, সে সমাজ অসতের রঙ্গমঞ্চ। সততা সেখানে সংখ্যালঘু। মানুষ সে সমাজে অসহায়, নীরবে নিভৃতে কাঁদে ন্যায় বিচারের বানী।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বঙ্গদেশ; শ্লোক - ৪৭৫


ত্তঁচলাকুড়; শ্লোক - ৭৪

যে ভূমে নাই শিল্পের মর্ম,
সে ভূমি ত্তঁচলাকুড়, বৃথা
শিল্পীর জন্ম, কর্ম ও ঘর্ম,
শিল্প সেথা অপরাধ সম।

পাদটীকা: ত্তঁচলাকুড় ময়লার স্তুপ, সেখানে উচ্ছিষ্ট বস্তু স্থান পায় মূল্যবান শিল্পকর্ম সেখানে শোভা পায় না। কোনো শিল্পকর্ম যদি আস্তাকুড়ে পরে থাকে তাহলে সেই বস্তুর শিল্প এবং গুনগত ম্যান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাই সে সমাজে শিল্পের মূল্যায়ন নাই সে সমাজ ত্তঁচলাকুড়, শিল্প সেখানে বৃথা, শিল্পী সেখানে অবমূল্যায়িত।  
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


চিত্র: আরিফুর রহমান

পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন