সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব; শ্লোক - ৩৪০

মিথ্যাবাদী সত্যকে করে ভয়,
না জানি কখন সত্য প্রকাশ হয়।
সত্যবাদী সর্বদা ডরে না জানি
কোন মিথ্যা করে সত্য কলঙ্কময়।

পাদটীকা: সত্য ও মিথ্যার চিরন্তন টানাপোড়েন; মিথ্যাবাদী সর্বদা আতঙ্কে থাকে—কখন তার মিথ্যা উদঘাটিত হবে। অপরদিকে, সত্যবাদীও একধরনের ভয় নিয়ে বাঁচে—না জানি কোন এক কুৎসিত মিথ্যার ছায়ায় তার সত্য কলঙ্কিত হয়। এই দ্বিমুখী ভয় সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্বের মানসিক চাপ ও সামাজিক বাস্তবতাকে প্রকাশ করে। শুধু সত্য বলাই যথেষ্ট নয়; সেই সত্যকে রক্ষা করাও এক নিরন্তর সংগ্রাম। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব; শ্লোক - ৩৪০


ভেজাল; শ্লোক - ৬১

দুধের সাথে পানি মিশালে 
তাহা না রহে খাঁটি। 
সত্য মিথ্যার মিশ্রণে বাস্তব 
নাটকীয় পরিপাটী। 

পাদটীকা: খাদ্যে ভেজাল মেশালে তা বিশুদ্ধতা হারায়, মূল্য এবং গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। অনুরূপ, সত্যের সাথে মিথ্যা মেশালে তা আর শতভাগ সত্য থাকে না, সত্য অংশের গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ভেজাল; শ্লোক - ৬১


সত্য প্রতিষ্ঠা; শ্লোক - ৪১৪

মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা
অনৈতিকতার পরিচয়।
সত্য সর্বদা প্রতিষ্ঠিত হোক,
মিথ্যাকে কখনো নয়।

পাদটীকা: আমরা যদি সততা, ন্যায় কথা বা কাজের পক্ষে থাকি থাহলে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে সৎ কর্ম করতে, নয়তো সমাজ একদিন মিথ্যায় ভরে যাবে আর সততা দুষ্প্রাপ্য মূল্যবোধে পরিণত হবে। তাই, জেনে বুঝে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করা উচিত নয়। সত্যের পক্ষে সর্বদা থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হওয়া উচিত। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ঈশ্বর সন্ধান; শ্লোক - ৩৪১

সর্ব ভক্তি সত্য ও ন্যায়ে,
সত্য ও সুন্দর পূজি।
অশরীরি খুঁজি না আমি,
সুমানবে ঈশ্বর খুঁজি।

পাদটীকা: মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে ভক্তি ও পূজার কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান পায় সত্য, ন্যায় ও সৌন্দর্য। এখানে অদৃশ্য, অশরীরি ঈশ্বরের পরিবর্তে জীবন্ত, সৎ, ও মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরত্ব অনুভূত হয়। এটি সেই দর্শনের প্রতিফলন, যেখানে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং মানবিকতা, ন্যায় এবং সত্যনিষ্ঠ জীবনযাপনই হয় চূড়ান্ত আরাধনা। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ঈশ্বর সন্ধান; শ্লোক - ৩৪১


প্রতিষ্ঠা; শ্লোক - ৩৮১

ইতিহাসে অনেক সত্য গিয়েছে
মিথ্যার ছাইয়ে ঢেকে;
অনেক মিথ্যা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে
সত্যের রঙে রঙ মেখে।

পাদটীকা: কলম্বাস যেমন আমেরিকার আবিস্কারক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, অনুরূপ ইতিহাসে আরো অনেক অসত্য বিষয় প্রচার প্রচারণায় সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

ঘটনা; শ্লোক - ৪২৬

আদি সত্য সেটা নয়
যেটা রটে।
প্রকৃত সত্য সেটাই
যেটা ঘটে।

পাদটীকা: মানুষ যখন কোনো কিছুর বর্ণনা করে, তখন সে আপন অভিব্যক্তির সহিত বর্ণনা করে। আর এই কারণে ঘটা ঘটনা আর প্রচারিত ঘটনার তফাৎ পরিলক্ষিত হতে পারে।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

নির্ণয়; শ্লোক - ৩৭৬

সর্বদা উহা সঠিক নয়,
যাহা লিখিত রয়।
সত্য মিথ্যা বুদ্ধি দ্বারা
নির্ণয় করিতে হয়।

পাদটীকা: সত্য মিথ্যা আমাদের বুদ্ধি দিয়ে নির্ণয় করতে হয়।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

মিনি কাব্য - ২১১

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
সত্য কখনো সুন্দর,
নিষ্ঠুর এবং নির্মম।
সত্য কখনো আনন্দের,
বেদনার, সাক্ষাত যম।

বাস্তববাদী জীবনদর্শন; শ্লোক - ৫১৬

জীবন সত্য, জীবন চরম;
স্বর্গ, নরক, পরকাল ভ্রম।
বাঁচার মত বাঁচো মানুষ; 
যতক্ষণ দেহে আছে দম।

পাদটীকা: বাস্তববাদী জীবনদর্শন। জীবনই চরম সত্য—যা আমরা এখন বাঁচছি, সেটিই বাস্তব। স্বর্গ, নরক, পরকাল এসব ধারণা মূলত বিশ্বাসের বশবর্তী, যার অস্তিত্ব নিয়েও নানা মতভেদ আছে। তাই ভবিষ্যতের অনিশ্চিত ভ্রমের পিছনে না ছুটে, যতক্ষণ প্রাণ আছে, ততক্ষণ মানুষের মতো করে সচেতনভাবে, সাহসের সঙ্গে জীবনকে উপভোগ করতে শেখাই শ্রেয়। জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থেকে বর্তমানেই বাঁচো, ভালো থেকো, ভালো রাখো। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বাস্তববাদী জীবনদর্শন; শ্লোক - ৫১৬


মিনি কাব্য - ২৯৪

মিনি কাব্য - ২৯৪
আরিফুর রহমান
-----------------
মুখোশে ঢেকে, ছলনায় মেখে
আড়াল হয় ক্ষণিকের তরে। ‌
সত্য, সুন্দর, সূর্যের আলো
যায় না ঢাকা চির তরে।

কর্ম, ধর্ম ও অমরত্ব; শ্লোক - ৩৩৯

মানুষ বেঁচে থাকে দুই ভাবে, কর্মে ও ধর্মে।
জীবন্ত থাকা মানেই বেঁচে থাকা নয়,
আদর্শহীন জ্যান্ত মানুষ মৃতই বলা যায়;
মানুষ মরেও অমর হয় কর্ম যোগ্যতায়।

পাদটীকা: শুধু শারীরিকভাবে জীবিত থাকাই জীবনের পরিপূর্ণতা নয়—মানুষ সত্যিকার অর্থে বাঁচে তার কর্মে ও নৈতিক আদর্শে। যে ব্যক্তি জীবিত থাকলেও আদর্শহীন, সে এক অর্থে মৃত। বিপরীতে, যে ব্যক্তি সত্য, ন্যায় ও সৎ‌কর্মে জীবন কাটায়, সে মৃত্যুর পরেও কর্মের গুণে স্মরণীয় হয়ে থাকে। জীবনের গৌরব সময়ের দৈর্ঘ্যে নয়, কর্মের মহত্বে নিহিত। - আরিফুর রহমান, নরওয়ে। 

কর্ম, ধর্ম ও অমরত্ব; শ্লোক - ৩৩৯


চিত্র নাট্য; শ্লোক - ৪৪৩

দুর্বল চিত্রনাট্যে নাটক সিনেমা হয় 
ইতিহাস নয়। 
যাহার বাস্তব ভিত্তি আছে, প্রমাণিত 
ইতিহাস হয়। 

পাদটীকা: কোন বিষয়কে সত্যি দাবি করলেই সেটা সত্যি হয়ে যায় না। কোন বিষয়কে সত্য প্রমান করতে গেলে তাহার বাস্তব ভিত্তি থাকতে হয়। আর কোন ঘটনাটি ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে সেটি সময়ই নির্বাচন করে নিবে। 
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

চিত্র নাট্য; শ্লোক - ৪৪৩


মিনি কাব্য - ৩১৫

মিনি কাব্য - ৩১৫
আরিফুর রহমান
-----------------
যেথা অনুচিত, অন্যায়, অসত্য বিরাজমান
ধর্ম সেখানেই প্রয়োজন।
যেথা উচিত, ন্যায়, সত্য স্বীকৃত - প্রতিষ্ঠিত
ধর্ম সেখানে নিষ্পয়োজন।

মিনি কাব্য - ১৭৮

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
আপন আঁখিতে পাইনা দেখিতে
আপন মুখখানি।
সকলেই সীমায় বদ্ধ, সীমাবদ্ধ
এই সত্য মানি।

মিনি কাব্য - ২৭১

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
সময় সত্য প্রদর্শক;
ক্রমান্বয়ে সব দেখায়।
ভবিষ্যত করণীয় টুকু
অতীত বর্তমান শেখায়।

ছল; শ্লোক - ৫৩

মাছ ঢাকা যায় ভাতের তলে 
আর দিয়ে শাক। 
ময়ূয়ের সাজে যতই সাজুক 
স্বভাবে সে কাক। 

পাদটীকা: কথা দিয়ে কথা ঢাকা যায়, মিথ্যা দিয়ে সত্যকে আড়াল করা যায়, তবে সর্বদা মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। মূর্খ ব্যক্তি জ্ঞানীর অভিনয় করলেও কোন না কোন সময় ব্যক্তির আচরনে প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশিত হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ছল; শ্লোক - ৫৩


সংবাদ সংজ্ঞা; শ্লোক - ২৯৮

যে সংবাদ অসত্য, ভিত্তিহীন
তাহা হলুদ বলেই গণ্য হয়।
ঘটা ঘটনার সত্য উচ্চারণ
সংবাদ বলে পরিগণিত হয়।

পাদটীকা: অসাধু ও অসত্য সংবাদ মাধ্যমের পরিচয় বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।


ছবি: মিখাইল রক্ষিত্যানস্কি

মিনি কাব্য - ১৭৫

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
মানুষ যখন-
সত্যের সন্মুখীন হতে ভয় পায়।
সত্য তখন-
মুচকি হাসে ঠাট্টা তামাশায়।

মিনি কাব্য - ১৯৪

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
অসাধু আর সুযোগলোভী
যখন কলকাঠি নাড়ায়।
মিথ্যা তখন খুব সহজে
সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।


পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন