প্রতিকৃতি; শ্লোক - ১৭৬

চেহারাটা দৈহিক প্রতিকৃতি
আত্মার নয়।
ব্যবহারে আত্মার প্রতিকৃতি
প্রকাশিত হয়।

পাদটীকা: মানুষের চেহারা মূলত দুইটি, একটি বাহ্যিক যা আমরা সচক্ষে দেখি, অন্য চেহারা মানুষের আত্মিক, যা আচরণের দ্বারা প্রকাশিত হয়, এবং আমরা অন্তর দিয়ে সেটি উপলব্ধ করি।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

প্রতিকৃতি; শ্লোক - ১৭৬


মিনি কাব্য - ১৭১

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
হাজার ইঁদুর খেয়ে
বিড়াল চললো হজ করতে।
ফিরে টুপি জুব্বা গায়
বিড়াল ধর্মের গীত গায়।

মানুষ দর্শন; শ্লোক - ১১৩

নরকে নয় ধরার মাঝে মানবে,
মুখ ও মুখোশে হাসে শয়তান।
অনুরূপ, সাধারণ মানব বেশে
খুঁজলেই পাবে আছে ভগবান।

পাদটীকা: শয়তানের বৈশিষ্ট্য সম্বলিত প্রাণী শুধুমাত্র নরকে, বা দেবতার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত শুধুমাত্র স্বর্গে বিরাজমান নয়। উভয় সত্তার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত মানুষ আমাদের আশেপাশেই বিরাজমান। আর এই সত্তাদ্বয় কে সনাক্ত করতে আমাদের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাই যথেষ্ট।    
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

মানুষ দর্শন; শ্লোক - ১১৩


স্বর্গ; শ্লোক - ১১১

স্বর্গের বর্ণনা রূপকথায়
আর আছে ধর্ম কথায়।
সংসার-ভবে স্বর্গ মেলে
ভালো কাজ ও কথায়।

পাদটীকা: স্বর্গের বর্ণনা শুধুমাত্র রূপকথা বা ধর্মে বিরাজমান। আর স্বর্গের অস্তিত্ব ভূপৃষ্ঠে বর্তমান। স্বর্গ বিরাজমান পৃথিবীর প্রকৃতিতে, প্রাণীতে, মানব সংসারের ভালো কাজ, কথা ও কর্মে। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

স্বর্গ; শ্লোক - ১১১


সমান; শ্লোক - ১০৩

নারী ও পুরুষ উভয় সমান
উভয়ই মানুষ মোরা।
হাতে হাত রেখে ভালোবাসায়
গড়ি পূর্ণ করি ধরা।

পাদটীকা: নারী এবং পুরুষ মানুষ হিসেবে সকলেই সমান। সকলের সম্মিলিত অংশ অবদানেই অসম্পূর্ণ পৃথিবী পূর্ণতা পাবে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সমান; শ্লোক - ১০৩


মিনি কাব্য - ৮৪

মিনি কাব্য
আরিফুর রহমান
-----------------
পৃথিবীর এই সভ্য সমাজে
অনেক অসভ্য মানুষ আছে,
যারা মানুষের মত দেখতে-
আশেপাশে মানুষের মতই হাসে।

অবিকারী; শ্লোক - ৭৯

নিজেকে আম দাবী করলেই
তেতুঁল হবে না আম।
যতই গাঢ় নীল রঙে ডুবাও
কাঁঠাল হবে না জাম।

পাদটীকা: লবণের গায়ে চিনি লিখে রাখলেই তা চিনিতে পরিনত হয় না, যদিও তা বাহ্যিক সাদৃশ্যে প্রায় একই রকম। প্রতিটি বস্তুর পরিচয় তার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ঠ নির্ধারণ করে।

অবিকারী; শ্লোক - ৭৯ চিনি লবণ


প্রাক্তন; শ্লোক - ৭১

ফেলে যাওয়া প্রাক্তন 
বারবার ফিরে আসে। 
ইশারায় কাছে ডাকে, 
জানালায় এসে হাসে। 

পাদটীকা: অতীতের সাথে বর্তমান অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কে যুক্ত, আর এই সম্পর্কের কারণে বারবার ফিড়ে আসে। গন্তব্য ভিন্ন হলেও কোথাও কোথাও আমরা একই পথ যাত্রী তাই আমরা বার বার প্রাক্তনের মুখোমুখি হই।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

প্রাক্তন; শ্লোক - ৭১


বিচ্ছেদ; শ্লোক - ৬৭

বিচ্ছেদে প্রারম্ভ মানব জন্ম;
প্রথমত ছেদ নাড়ীর, মা ও শিশুর।
বিচ্ছেদে অন্ত মানব জীবন;
শেষ ছেদ মায়ায়, জন ও স্বজনের।

পাদটীকা: ভূমিষ্ট হওয়ার পর মায়ের সঙ্গে আমাদের নাড়ীর সংযোগ কর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জীবন যাত্রা। স্বতন্ত্র চলতে চলতে আমরা মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হই, গড়ে ওঠে পরষ্পরের মাঝে অদৃশ্য নাড়ীর টান। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে, শেষ বারের মত বিচ্ছেদ হয় আত্মীয়তার সম্পর্কে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে। 

বিচ্ছেদ; শ্লোক - ৬৭

ধর্ম কর্ম; শ্লোক - ৬৩

বিজ্ঞ সৃজন কর্ম করে,
সাজায় ধরা, সুজীবন যাপনের তরে।
ধার্মিক গণে কর্ম করে
মৃত্যুর পরে কল্প জীবনে বাঁচার তরে।

পাদটীকা: প্রতিটি মানুষ ধর্ম বা কর্ম করে একটি বিশেষ কারণে বা উদ্দেশ্যে। কারো কারো উদ্দেশ্য পৃথিবীকে সুন্দর করে গড়ে সুখকর এবং নিরাপদ জীবন যাপন করা। আর কারো কারো উদ্দেশ্য মৃত্যুর পরে সুন্দর জীবন যাপন করা।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ধর্ম কর্ম; শ্লোক - ৬৩

ভেজাল; শ্লোক - ৬১

দুধের সাথে পানি মিশালে 
তাহা না রহে খাঁটি। 
সত্য মিথ্যার মিশ্রণে বাস্তব 
নাটকীয় পরিপাটী। 

পাদটীকা: খাদ্যে ভেজাল মেশালে তা বিশুদ্ধতা হারায়, মূল্য এবং গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। অনুরূপ, সত্যের সাথে মিথ্যা মেশালে তা আর শতভাগ সত্য থাকে না, সত্য অংশের গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ভেজাল; শ্লোক - ৬১


সুকর্ম; শ্লোক - ৫৪

ভবে ধর্ম কর যথা তথা, 
কর্ম করা চাই ভালো; 
মনের নোংরা ধুয়ে মুছে 
জ্ঞানের দীপ জ্বালো।

পাদটীকা: ভালো কর্ম মানুষকে সম্মানিত করে। একজন সুনাগরিক দেশের সম্পদ। তাই আমি মনে করি ব্যক্তিগত এবং বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সুশিক্ষিত এবং সুকর্মী হিসেবে আমাদের গড়ে তোলা উচিত। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

সুকর্ম; শ্লোক - ৫৪


ছল; শ্লোক - ৫৩

মাছ ঢাকা যায় ভাতের তলে 
আর দিয়ে শাক। 
ময়ূয়ের সাজে যতই সাজুক 
স্বভাবে সে কাক। 

পাদটীকা: কথা দিয়ে কথা ঢাকা যায়, মিথ্যা দিয়ে সত্যকে আড়াল করা যায়, তবে সর্বদা মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। মূর্খ ব্যক্তি জ্ঞানীর অভিনয় করলেও কোন না কোন সময় ব্যক্তির আচরনে প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশিত হয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

ছল; শ্লোক - ৫৩


দু মুখো; শ্লোক - ৫২

তুমি যাকে ভেবেছ বন্ধু
সে তোমাকে নয়।
তোমার পিছনে দুর্নাম
অন্য কাউকে কয়।

পাদটীকা: কোন কোন মানুষ একাধিক ব্যক্তিত্ব পোষণ করেন। সম্মুখে বন্ধুর ভান করেন আর পিছনে শত্রুতা লালন করেন। এরূপ ব্যক্তি সঙ্গে পরিহার করে চলা উচিত, কারণ তারা তাদের নিজেদের এবং অপরের জন্য ক্ষতিকারণ। প্রকৃতপক্ষে এরূপ ব্যক্তি কারোরই বন্ধু নয়। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

দু মুখো; শ্লোক - ৫২


কেরামত; শ্লোক - ৪৯

করিওনা হেলা, ভাবিওনা 
 কাউকে অতি ক্ষূদ্রতর;
কেরামতে দেখায় কেরামতি 
ঝড়ের দিনে বড়সর।

পাদটীকা: হাতি কাঁদাতে পড়লে চামচিকা লাথি মারে, এমনকি ক্ষূদ্র পিঁপড়াও বৃহৎ হাতির মৃত্যুর কারণ হতে পারে। কার মনে কী আছে তা বাহির দেখে বলা যায় না, পরহিংসা পরায়ণ লোক সুযোগ পেলেই সহিংস হয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে, তাই কাউকে কখনো তুচ্ছ ভেবে অবহেলা করা উচিত নয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কেরামত; শ্লোক - ৪৯


লঘু বনাম গুরু; শ্লোক - ৪৮

অসতের হাত প্রশস্ত অতি 
সৎ লোকের হাত চিকন সরু। 
সৎ লোকেরা সংখ্যা লঘু; 
অসৎ লোকে সংখ্যায় গুরু। 

পাদটীকা: ক্ষেত্রভেদে, অসৎ লোকেরা অসৎ উপায়ে বিত্তবান এবং শিকারী নেকড়েদের ন্যায় সংঘবদ্ধ, অনুরূপ সৎ লোকেরা শিকারী নেকড়েদের ভয়ে ছন্নছাড়া।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

লঘু বনাম গুরু; শ্লোক - ৪৮


অতিথি; শ্লোক - ৪৬

যে চলে যেতে চায়
তাকে এগিয়ে দাও।
প্রয়োজনে মনটাকে
পাথরে বেধে নাও।

পাদটীকা: যে ব্যক্তি তোমাকে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে যেতে দেয়াই শ্রেয়। যদি কখনো সে তোমাকে প্রয়োজন এবং প্রিয়জন মনে করে তাহলে সে আপনা আপনি ফিড়ে  আসবে। কারণ, বলপূর্বক কখনো কোন সুসম্পর্ক স্থাপন করা যায় না।  
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।
অতিথি; শ্লোক - ৪৬


খলনায়ক; শ্লোক - ৪৪

নায়কীয় বীরত্ব দেখাতে হলে 
খলনায়ক থাকা আবশ্যক। 
শক্তিশালী খলনায়ক পরাস্ত; 
নায়ক বীর, বাহবা প্রাপক। 

পাদটীকা: সেই গল্পে নায়কের ভূমিকা শক্তিশালী ও বীরত্বপূর্ণ যে গল্পে নায়কের তুলনায় শক্তিশালী খলনায়ক থাকে। তাই গল্পে নায়কের শক্তিশালী ভূমিকা শক্তিশালী খলনায়কের অনুপস্থিতিতে সম্ভব নয়।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

খলনায়ক; শ্লোক - ৪৪


নায়ক; শ্লোক - ৪৩

নায়ক যেথা দূর্বল, পরাস্ত; 
বিজয় খলনায়কে পায়। 
সেথা জয়গান নায়কের নয়, 
সবে খললায়কের গায়। 

পাদটীকা: দূর্বল বা পরাজিতরা সর্বদা গল্প বা ইতিহাসে নায়ক হিসেবে ঠাই পায় না। মানুষ সর্বদা বিজেতায় জয়কীর্তন করে, বিজেতাকে বিজয় মালা দিয়ে নায়ক হিসেবে বরণ করে। অর্থাৎ অধিকাংশ মানুষ দূর্বলের নয়, বরং সবল এবং বিজেতার পক্ষাবলম্বন করে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

নায়ক; শ্লোক - ৪৩


পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন