শুরু; শ্লোক - ১৬১

বিশাল বড় বট বৃক্ষ,
শুরু ছোট্ট চারা হইতে।
উপরে উঠিতে প্রথম পা
সর্বদা নিচের সিঁড়িতে।

পাদটীকা: পৃথিবীতে কোন কিছুই ছোট নয়। কোন কোন বিষয় আছে যা আদতে ছোট দেখা গেলেও পরিণতিতে একদিন তা বিশাল আকার লাভ করে। ছোট উদ্যোগ একদিন মানুষকে বিশাল স্থানে পৌঁছে দিতে পারে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

শুরু; শ্লোক - - ১৬১


মানুষ দর্শন; শ্লোক - ১১৩

নরকে নয় ধরার মাঝে মানবে,
মুখ ও মুখোশে হাসে শয়তান।
অনুরূপ, সাধারণ মানব বেশে
খুঁজলেই পাবে আছে ভগবান।

পাদটীকা: শয়তানের বৈশিষ্ট্য সম্বলিত প্রাণী শুধুমাত্র নরকে, বা দেবতার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত শুধুমাত্র স্বর্গে বিরাজমান নয়। উভয় সত্তার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত মানুষ আমাদের আশেপাশেই বিরাজমান। আর এই সত্তাদ্বয় কে সনাক্ত করতে আমাদের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাই যথেষ্ট।    
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

মানুষ দর্শন; শ্লোক - ১১৩


স্বর্গ; শ্লোক - ১১১

স্বর্গের বর্ণনা রূপকথায়
আর আছে ধর্ম কথায়।
সংসার-ভবে স্বর্গ মেলে
ভালো কাজ ও কথায়।

পাদটীকা: স্বর্গের বর্ণনা শুধুমাত্র রূপকথা বা ধর্মে বিরাজমান। আর স্বর্গের অস্তিত্ব ভূপৃষ্ঠে বর্তমান। স্বর্গ বিরাজমান পৃথিবীর প্রকৃতিতে, প্রাণীতে, মানব সংসারের ভালো কাজ, কথা ও কর্মে। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

স্বর্গ; শ্লোক - ১১১


বিচ্ছেদ; শ্লোক - ৬৭

বিচ্ছেদে প্রারম্ভ মানব জন্ম;
প্রথমত ছেদ নাড়ীর, মা ও শিশুর।
বিচ্ছেদে অন্ত মানব জীবন;
শেষ ছেদ মায়ায়, জন ও স্বজনের।

পাদটীকা: ভূমিষ্ট হওয়ার পর মায়ের সঙ্গে আমাদের নাড়ীর সংযোগ কর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জীবন যাত্রা। স্বতন্ত্র চলতে চলতে আমরা মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হই, গড়ে ওঠে পরষ্পরের মাঝে অদৃশ্য নাড়ীর টান। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে, শেষ বারের মত বিচ্ছেদ হয় আত্মীয়তার সম্পর্কে।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে। 

বিচ্ছেদ; শ্লোক - ৬৭

আশা; শ্লোক - ৫৮

কোকিল আছে
নাইতো বাসা;
আলোক নাই
আছে আশা।

পাদটীকা: কোন কিছুর অভাব মানুষকে তার লক্ষ্য হতে বিচ্যুত করতে পারে না, বরং চেষ্টা করতে আর পরিশ্রমের দ্বারা অভাবকে জয় করার দিকে ধাবিত করে। মানুষ কোন কিছু জয় করতে ব্যর্থ হলেও সে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করে লক্ষ্য পূরণ করার চেষ্টা করে। 
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কোকিল আশা; শ্লোক - ৫৮


জলাধার; শ্লোক - ৪৫

সব স্থল ভূমি দেশ মহাদেশ 
খন্ড বিখন্ড দ্বীপমালা মাত্র। 
নীলাভ ধরণীর উপরিভাগ 
এক বিশাল জলাধার পাত্র। 

পাদটীকা: জল এবং স্থলের পরিমান বিচারে পৃথিবীকে ভূলোক না বলে জলাধার বলাই বেশি যৌক্তিক। কারণ, পৃথিবীর মোট আয়তনের তিন ভাগ হলো জল আর মাত্র এক ভাগ হলো স্থল।
- আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

জলাধার; শ্লোক - ৪৫


পাল্লা; শ্লোক - ৩০

মানুষের সাথে পাল্লা দিয়ে
সামনে এগিয়ে যাই।
অসীমের সাথে পাল্লা দিয়ে
বার বার হোঁচট খাই।

পাদটীকা: আমরা পরষ্পরের সাথে প্রতিযোগীতা করে সন্মূখে অগ্রসর হই, কিন্ত যে আমাদের চেয়ে বড় বা অসীম, তাঁর সাথে প্রতিযোগীতা করে পেরে উঠিন না। কারণ, মানুষ তার স্বীয় ক্ষমতা বা যোগ্যতার বাইরে কিছু করতে পারে না।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

পাল্লা; শ্লোক - ৩০


বদলায়, শ্লোক - ২৫

বদলায় নদীর স্তর, স্রোত গতি পথ,
বদলায় নীতি, নানা অভিমত।
টাকা হাত বদলায়, সম্পর্ক বদলায়,
বদলায় মানুষ, হয় সৎ অসৎ।

পাদটীকা: জগতে কিছুই চিরিস্থায়ী নয়; পরিবর্তন জগতের ধর্ম। এ মহাবিশ্বের প্রতিটি উপকরণ বিবর্তনের ফসল। এখানে এক গল্প শেষের মধ্য দিয়ে নতুন গল্প শুরু হয়। এখানে চিরস্থায়ী বলে কিছুই নাই, চিরস্থায়ী বলে যা আছে, তা হলো পরিবর্তন।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

বদলায়, শ্লোক - ২৫


গমন; শ্লোক - ২৩

স্বজনের গমণে ব্যথীত হই
হৃদয় ব্যথায় হয় চূর্ণ বিচূর্ণ।
সংসারে পুরাতনের গমনে,
নতুনে করে সে আসন পূর্ণ।

পাদটীকা: সুহৃদ সুজনের সাথে বিচ্ছেদে আমরা ব্যথিত হই, তার পরলোক গমনে শোকাতর এবং স্তম্ভিত হই। তবে কারোর আগমন বা গমনে পৃথিবী থেমে থাকে না, আপন নিয়মে চলে। পৃথিবীর কোনো শূন্যস্থান চিরকাল শূন্য থাকে না, একসময় না একসময় পূর্ণ হয়; হয়তো বায়ু দিয়ে, নয়তো পানি দিয়ে, নয়তো মাটি দিয়ে।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

গমন; শ্লোক - ২৩


স্রষ্টা চরিত্র; শ্লোক - ১২

মানব আপন স্বার্থেই গড়েছে
ঈশ্বর, খোদা, ভগবান; 
আপন হাতেই লিখেছে কিতাব
তাঁহার নামে জয়গান।

পাদটীকা: ঈশ্বর কখনো মানুষের সামনে এসে তার অস্তিত্ব, মহানুভবতা বা ক্ষমতার কথা জানান দেননি। এবং ঈশ্বরের সকল জয়গান মানুষের তৈরী বর্ণমালা দিয়ে মানুষের হাতেই লেখা। মানুষ প্রাকৃতিকভাবে আশাবাদী প্রাণী, ভরসা করতে ভালোবাসে, তাই সে, স্বীয় জ্ঞানের মাপকাঠি দিয়ে এই কাল্পনিক সত্তাকে সাজায়, এবং ভরসা করে অপ্রাপ্তিগুলো ভুলে থাকে। আবার এই অজ্ঞাত শক্তির ভয় দেখিয়ে অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করে। মোটকথা, ঈশ্বরের ধারণার স্রষ্টা মানুষ স্বয়ং।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

স্রষ্টা চরিত্র; শ্লোক - ১২


কালক্ষয়; শ্লোক - ৯

ভূবনেতে জন্ম জীবন
অতি স্বল্প সময়;
কাজ ফেলে অকাজে
সময় করি ক্ষয়।

পাদটীকা: পৃথিবীতে আমাদের জন্ম এবং জীবিত কাল, মহাকালের হিসেবে খুবই নগন্য সময়ের। এই সময় মহামূল্যবান, কারণ আমরা কালের ধুলোয় মিলিয়ে গেলে আমাদেরকে আর দ্বিতীয়বার সময় দেয়া হবে না, পুনরায় জন্মগ্রহণ করে মহান কিছু করে যাওয়ার, তাই জীবিতকালে মুহূর্ত গুলো ভালো কিছুর উদ্দেশ্যে ব্যয় উচিত।
আরিফুর রহমান, নরওয়ে।

কালক্ষয়; শ্লোক - ৯ ; শ্লোক - ৯


পরিসংখ্যান

গোপনীয়তা | শর্তাবলী | যোগাযোগ

শব্দ শুনুন